প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে পরিচয়ে যুবলীগ নেতার ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ডুমুরিয়ায় ৩০ লাখ টাকার সরকারি মাটি লুট
খুলনা অফিস :
এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রীর আপন ভাগ্নে পরিচয় ও ভূয়া কাগজ পত্র দেখিয়ে এক যুবলীগ নেতা পরিচয় ডুমুরিয়া নদী খননের প্রায় ত্রিশ লাখ টাকার সরকারি মাটি কেঁটে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন মিথ্যাচারের ঘটনা ফাঁস হলে গতকাল সোমবার দুপুরে স্থানীয় গ্রামবাসী ওই সরকারি মাটি কাঁটা বন্ধ করে একটি স্কেভেটর আটক করে রেখেছে। জনরোষে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে ওই মাটি পাচারকারী দল। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার দুপুরে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের কাঠালতলা আপার ভদ্রা নদীর পাড় এলাকায়।
জানা গেছে, গত বছর বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনার ডুমুরিয়া ও যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার অভ্যান্তরে ১৯ কিলোমিটার জুঁড়ে ২০ কোটি টাকা ব্যয় আপার মরা ভদ্রা নদী খনন করা হয়। নদী খননের মাটি তুলে নদীর দুই পাড় জুঁড়ে রাখা হয়। ওই মাটি রাখার ফলে নদী সংলঘ গ্রামগুলো বন্যনিয়ন্ত্র বাঁধেম ন্যয় বিভিন্ন সময় প্রকৃতিক দুর্যোগ, জোয়ারের পানি ও বর্ষার মৌসুমে জলোচ্ছাস থেকে মানুষ রক্ষা পায়।
তারই ফাঁক গলিয়ে যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার যুবলীগ নেতা ও এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যর আপন ভাগ্নে পরিচয় দানকারী পলাশ চক্রবর্তী নামে জনৈক যুবক পাউবোর মাধ্যমে মাটি ক্রয় করেছে মর্মে ভূয়া ট্রেন্ডারের কাগজ পত্র দেখিয়ে ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের কাঠালতলা বাজার এলাকা থেকে একাধিক স্কেভেটর (মাটি কাঁটা যন্ত্র) দিয়ে গত এক সপ্তাহে (রাতদিন) আধা কিলোমিটার জুঁড়ে নদীর পাড়ের প্রায় ৩০ লাখ টাকার মাটি কেঁটে পাচার করে বিক্রি করে দেয় । সরকারি মাটি পাচারে ভূয়া কাগজ পত্র ব্যবহার করা হচ্ছে, এমন সংবাদ এলাকায় প্রচার হলে, গতকাল সোমবার দুপুরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, একাধিক ইউপি সদস্য বাজার কমিটির নেতারা ঘটনা স্থলে যেয়ে ওই মাটি পাচার কাজ বন্ধ করে দেয় হয়। এবং নদীর পাড়ে থাকা একটি স্কেভেটর আটক করে রাখা হয়।
আটলিয়া ইউপি সদস্য আব্দুল হালিম মুন্ন, মনিরুজ্জামান রাজু, ও কাঠালতলা বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ শেখ ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান মোড়ল বলেন, এবং ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে, যুবলীগ নেতা ও প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে পরিচয়ে পলাশ চক্রবর্তী ও স্থানীয় যুবক গৌতম, ইব্রাহীম ও বিশ্বজিৎ এদের সহযোগীতায় পলাশ চক্রবর্তী প্রায় ৩০ লাখ টাকার সরকারি মাটি কাঠালতলা এলাকা থেকে পাচার করে নিয়ে গেছে। মাটি পাচারকারীর মূল হোতা মনিরামপুরের যুবলীগ নেতা ও প্রতিমন্ত্রীর কথিত ভাগ্নে পরিচয় দানকারি পলাশ চক্রবর্তী জানান, আমি প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে। ডুমুরিয়ার আটলিয়া ইউনিয়নের আ”লীগ নেতা গৌতম ঘোষ, ইব্রাহীম মোল্লা ও বিশ্বাজিৎ মজুমদার তারা আমাকে চেনে। তারা মাটি কাঁটার বিষয় সকল প্রকার সহযোগীতা করেছে। বাজার কমিটির নেতাদের কিছু টাকা দিতেও চেয়েছি। সত্য কথা বলতে কি, নদীর মাটি আমি টেন্ডার নেয়ার চেষ্টা করছি। মামার মাধ্যমে (প্রতিমন্ত্রী) দ্রুত কাগজ পত্র পেয়ে যাবো। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মাটি কাঁটা বন্ধ করলো কেন ?
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আলীগ নেতা এ্যাড. প্রতাপ কুমার রায় বলেন, নদীর মাটি পাচারের ফলে বন্যার আশংকা রয়েছে। অবৈধ ভাবে সরকারি মাটি এভাবে পাচার হতে দেয়া যায় না। পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
কেশবপুর পাউবোর উপ-বিভাগীয় কর্মকর্তা মুন্সী আছাদুজ্জামান বলেন, আপার ভদ্রা নদীর মাটি কোনো টেন্ডার দেয়া হয়নি। স্থানীয়দের সহযোগীতায় মাটি কাঁটা বন্ধ করা হয়েছে। মাটি পাচাকারিদের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।
এজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য্য এমপি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় আমাকে অনেকেই মামা বলে ডাকে সত্য। পলাশ চক্রবর্তী নামে আমার কোনো ভাগ্নে নেই।