হোম অর্থ ও বাণিজ্য পেঁয়াজ-আলু-ডিম: মাস পেরোলেও কার্যকর হয়নি সরকারি দাম

বাণিজ্য ডেস্ক:

দেশি পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও তা এক মাসেও বাজারে কার্যকর হয়নি। উল্টো সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে দেশি পেঁয়াজ। এছাড়া খুচরায় প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা থেকে ৫৬ টাকায় এবং অর্ধশতকেও মিলছে না এক হালি ডিম।

ঠিক এক মাস আগে অর্থাৎ গত ১৪ সেপ্টেম্বর দেশি পেঁয়াজ, আলু ও ডিম- এই তিন পণ্যের দাম বেঁধে দেয় সরকার। সে সময় খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ৬৪ টাকা থেকে ৬৫ টাকা, আলুর দাম ৩৫ টাকা থেকে ৩৬ টাকা এবং প্রতি পিস ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয় ১২ টাকা। সে হিসেবে দেশের বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হওয়ার কথা ১৪৪ টাকা দরে। কিন্তু বাজারের বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।

বেঁধে দেয়া দর কার্যকরে যদিও বাজারে চলছে সরকারি সংস্থার অভিযানসহ নানামুখী তৎপরতা, অথচ ফল হয়েছে উল্টো। সরকারি দর তো বাজারে কার্যকর হয়ইনি। বরং, একমাস আগের দরের চেয়ে বেড়েছে পেঁয়াজ ও ডিমের দাম।

শনিবার (১৪ অক্টোরব) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯৫ টাকা থেকে ১০০ টাকায়; যা একমাস আগে ছিল ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা। এছাড়া খুচরায় প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা থেকে সবোর্চ্চ ১৬৮ টাকায়। আগে যা ছিল ১৫০ টাকা থেকে ১৫৮ টাকা।

বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রির বিষয়ে এক পেঁয়াজ বিক্রেতা বলেন, আমরা প্রতি মণ পেঁয়াজ ৩ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৭০০ টাকা দরে কিনছি। পাশাপাশি পরিবহন বাবদ খরচ তো আছেই। এই পেঁয়াজ আমরা কীভাবে কম দামে বিক্রি করব?

সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি না করার বিষয়ে এক পেঁয়াজ বিক্রেতা জানান, সরকারের লোক কিনে বিক্রি করুক, তাহলে বুঝবে কত টাকায় বিক্রি করতে হবে লাভ করতে হলে।

এদিকে চড়া দামে নাভিশ্বাস ভোক্তাদের। এক ক্রেতা বলেন, বাজারে দুই হাজার টাকা নিয়ে আসলে দুইটি পণ্য কিনেই পকেট খালি হয়ে যায়। ফলে মাস শেষে আমাদের ২ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দেনা হয়ে যায়। আমাদের চলতে বেশ কষ্ট হয়।

ডিমের অস্বাভাবিক দাম নিয়ে আরেকজন ক্রেতা বলেন, সরকার একটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করেছে, অথচ একটা ডিম খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকা দরে।

এদিকে সরকারি দর কার্যকর না হলেও আলু বিক্রি হচ্ছে একমাস আগের দরেই। প্রতি কেজি আলু খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা থেকে ৫০ টাকায়। হিমাগারগুলোতে কারসাজির কারণে দাম কমছে না বলে দাবি করছেন আড়তদাররা।

আলুর দাম নিয়ে এক বিক্রেতা বলেন, প্রতি কেজি আলু ৪০ টাকা দরে কিনে, তা বাছাই করে তারপর ৪৪ টাকা দরে বিক্রি করছি। কোল্ডস্টোর পর্যায়ে আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করা গেলে সরকারের আলুর দাম নির্ধারণ করার প্রয়োজন পড়তো না। এমনিই বাজারে আলুর দাম কম থাকতো।

অন্যদিকে বাজারে চড়া ব্রয়লার মুরগির দামও। এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। এক বিক্রেতা বলেন, বাজারে সোনালী মুরগির কেজি ৩২০ টাকা, ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকা।

পণ্যের দাম বেশি থাকায় হতাশ এক ক্রেতা বলেন, বাজারে বর্তমানে সব পণ্যের দামে আগুন। বাজারে কোনো জিনিসে হাত দেয়া যায় না।

এদিকে বাজার স্থিতিশীল করতে পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন