হোম জাতীয় পেঁয়াজের মতো ছোট্ট ঘটনা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করে: সংসদীয় কমিটি

পেঁয়াজের মতো ছোট্ট ঘটনা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করে: সংসদীয় কমিটি

কর্তৃক
০ মন্তব্য 128 ভিউজ

সংকল্প ডেস্ক:

ভারতীয় সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা এবং হঠাৎ করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করায় উষ্মা প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। চলতি মাসের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকে এ দুটি বিষয়সহ দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো জোরালোভাবে উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।

রবিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। এদিন বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের কথা থাকলেও তা হয়নি। কমিটি বলছে, জেসিসি’র বৈঠক শেষে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। কিন্তু কিছু কর্মকাণ্ডের জন্য সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে। এত কষ্ট করে সম্পর্ক উন্নয়ন করি, আর ছোট্ট পেঁয়াজের জন্য সম্পর্ক নষ্ট হয়। এর কারণে জনমনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। হঠাৎ পেঁয়াজ বন্ধ করে দিয়ে পরে দুঃখ প্রকাশ—এসব কোন ধরনের আচরণ। এজন্য আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর জেসিসি’র যে মিটিং হবে, সেখানে এ বিষয়গুলো জোরালোভাবে তুলে ধরতে বলেছি।’

হুট করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধে উদ্বেগ জানিয়ে ফের তা চালু করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনারকে লেখা চিঠিতে এ আহ্বান জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন জানান, বিষয়টি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘অনুতপ্ত।’

বৈঠক শেষে ফারুক খান দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সম্মেলনের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘গত দুই দিন ভালো মিটিং হয়েছে। এরকম ভালো মিটিং ১০টা দেখেছি। ১০টা মিটিংয়ে বলা হয়েছে সীমান্তে হত্যা বন্ধ হবে। কিন্তু হয়নি। জোর দিয়ে এগুলো বলতে হবে। আমরা এগুলো বন্ধ চাই। জোরেশোরে এটা বলতে হবে।’

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনা বরাবরই আলোচনায় থাকে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মধ্যেও ভারত প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর সীমান্তে হত্যাকাণ্ড কয়েক বছর আগে কমে এলেও সম্প্রতি তা আবারও বাড়ছে। শনিবার শেষ হওয়া দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানদের সম্মেলনেও আগের মতো ভারতের পক্ষ থেকে এই হত্যা শূন্যের কোঠায় আনার আশ্বাস পাওয়া গেছে।

মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সাড়ে আট মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তে সহিংসতায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩৯ বাংলাদেশির। এরমধ্যে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে। পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে বিএসএফ সদস্যদের শারীরিক নির্যাতনের পর।

গত বছর এ সময় (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) সীমান্তে বিএসএফের গুলি বা নির্যাতনে মারা গিয়েছিলেন ২৮ জন বাংলাদেশি।

গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০১৮ সালে সীমান্ত হত্যা কিছুটা কমলেও সেটি তিনগুণ বাড়ে ২০১৯ সালে।

কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও মন্ত্রী এ.কে. আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, হাবিবে মিল্লাত, নাহিম রাজ্জাক, কাজী নাবিল আহমেদ ও নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) অংশগ্রহণ করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন