আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনা শুরু করতে ইরানকে তাগাদা দিয়েছে ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানি (ই থ্রি)। গ্রীষ্মের শেষ নাগাদ সমঝোতার কোনও দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের হুমকিও দিয়েছে তারা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এক ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেন ওই তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া, তাদের সঙ্গে ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল। গত মাসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংঘাতের পর পশ্চিমা নেতারা প্রথমবারের মতো ইরানের সঙ্গে বৈঠক করলেন।
ফোনালাপের পর এক ফরাসি কূটনৈতিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, একটি দীর্ঘস্থায়ী এবং যাচাইযোগ্য পারমাণবিক চুক্তি করার জন্য ইরানকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
চীন ও রাশিয়াসহ এই তিন দেশই ২০১৫ সালের সেই পরমাণু চুক্তির অবশিষ্ট পক্ষ, যার আওতায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধতার বিনিময়ে তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের যে প্রস্তাবে এই চুক্তি অনুমোদিত হয়েছিল, তা ১৮ অক্টোবর মেয়াদোত্তীর্ণ হবে। এর আগে ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৩০ দিনের মধ্যে ইরানের ওপর পুরোনো সব নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
ইউরোপীয় দেশগুলো বহুবার সতর্ক করেছে যে, নতুন পরমাণু চুক্তি না হলে তারা স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া বহাল করবে। ফরাসি কূটনৈতিক কর্মকর্তার ভাষায়, গ্রীষ্মের শেষ নাগাদ এমন কোনও চুক্তির পথে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে মন্ত্রীরা স্ন্যাপব্যাক ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন।
অবশ্য দৃশ্যমান অগ্রগতি বলতে কী বোঝানো হয়েছে, তা ওই কর্মকর্তা খোলাসা করেননি।
মার্কিন ও ইসরায়েলি বিমান হামলার পর জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকরা ইরান ছেড়ে গেছেন। দেশটি আলোচনায় রাজি হওয়ার ইঙ্গিত দিলেও ওয়াশিংটন-তেহরান পরমাণু আলোচনার ষষ্ঠ দফা শিগগির শুরু হওয়ার কোনও লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।
সমালোচকরা বলেছেন, সমঝোতার জন্য আগস্টের শেষ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ই-থ্রি। তবে ইরান আলোচনায় পুরোদমে ফিরলেও মাঠে পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি ব্যতিরেকে এই সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত সমাধান অসম্ভব।
দুই ইউরোপীয় কূটনীতিবিদ জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে শিগগিরই আলোচনার সম্ভাবনা তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ কৌশল সমন্বয়ের চেষ্টা চলছে।