নড়াইল অফিস :
নড়াইলের মিজার্পুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজে লাঞ্ছিত হওয়া এবং মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে মোটরসাইকেল উপহার দিয়েছেন প্রখ্যাত নাট্যকার রামেন্দু মজুমদার। শনিবার (৪ মার্চ) সকালে নড়াইল শহরের রুপগজ্ঞ বাজারের আশ্রম রোডে টিভিএস মোটরসাইকেল এর শো-রুম হতে নাট্যকার রামেন্দু মজুমদারের পক্ষে তার জামাতা সৈয়দ আপন আহসান আনুষ্ঠানিক ভাবে অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে মোটর সাইকেলটি হস্তান্তর করেন।
মোটরসাইকেল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বলেন,এ মোটরসাইকেলটি নিছক একটা উপহার নয়, এটা অসামান্য উপহার। এ উপহার প্রমান করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস সেদিন কোন অপরাধ করেননি। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলেন। তিনি একজন সৎ ও ভালো মানুষ। কর্মক্ষেত্রে একজন দক্ষ ও যোগ্য মানুষ। এ উপহার সারা দেশ ও বিশ্ববাসিকে জানিয়ে দিল অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে সবাই ভালোবাসেন।
ক্ষতিগ্রস্থ অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বলেন, মানুষের জিবনে ভালো সময় খারাপ সময় আসে আমি খারাপ সময়টা ভুলে মানুষের ভালোবাসা নিয়ে চলতে চাই। এসময় উপস্থিত ছিলেন নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. রবিউল ইসলাম,নড়াইল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন খান নিলু,পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরাসহ আরো অনেকে।
প্রসঙ্গত, নড়াইলে মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় নিজের ফেসবুক আইডিতে নূপুর শর্মার ছবি ব্যবহার করে লেখেন-প্রণাম নিও বস ‘নূপুর শর্মা’ জয় শ্রীরাম। এ পোস্ট দেয়ার পর গত বছর ১৮ জুন সকালে কলেজে আসেন রাহুল। এরপর তার বন্ধুরা পোস্টটি মুছে ফেলতে বললেও পোস্ট মুছেননি রাহুল।
পরে শিক্ষার্থীরা বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জানান। এক পর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের সব শিক্ষকদের পরামর্শে রাহুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে কলেজ চত্বরে থাকা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জসহ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোঁড়ে। ঘটনার সময় অন্তত ১০ জন ছাত্র-জনতা আহত হন।
অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ এনে বিক্ষুদ্ধ জনতা ঘটনার দিন ১৮ জুন বিকেলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস এবং শিক্ষার্থী রাহুল দেব রায়কে গলায় জুতারমালা পরিয়ে প্রতিবাদ জানান। পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।