নড়াইল প্রতিনিধি:
নড়াইলের কালিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে ফরিদ মোল্লা (৫৭) নামের এক ব্যক্তি নিহতের ঘটনায় প্রতিপক্ষের কমপক্ষে ২০টি বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
ওই রাতেই পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথ অভিযানে সংঘর্ষের সাথে জড়িত উভয় পক্ষের ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার বাবরা–হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন – মো. আমিরুল ইসলাম (২০), আতিকুর রহমান (১৯), হাচিবুর রহমান (৪৫), মো. মোরসালিন (১৯), হাসেম মোল্যা (৩৪), মনি মিয়া (৪২), মুজাহিদুল (২০), সিরাজ মোল্যা (৫০), দিকু শেখ (২৫), আবু জাফর মোল্যা (৬৫), শাহাদাত হোসেন (৫৬), মুন্নু শেখ (৫২), শাহাজান (৫০), ইউসুফ (২০), নয়ন মোল্যা (২২), আব্দুল মান্নান (৪৫), জমির মল্লিক (৪৮), দিদার মোল্যা (২৫), মনিরুল ইসলাম (১৯) এবং আমিরন হোসাইন(২১)। তারা সকলেই ওই এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যা পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জেরে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। ইতিমধ্যে দুপক্ষের বিরোধে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকালে মিলন মোল্যা পক্ষের সানোয়ার নামের একজন নড়াইলে আদালতে মামলার হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে একা পেয়ে আফতাব মোল্য পক্ষের লোকেরা মারধর করে। এর জেরে শুক্রবার(১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মিলন মোল্যা পক্ষের লোকেরা আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করে। পরে খবর পেয়ে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফরিদ মোল্লাকে খুলনা মেডিকেলে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আফতাব মোল্যা পক্ষেরে লোক ফরিদ মোল্যা নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা রাতেই প্রতিপক্ষের কমপক্ষে ২০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও দোকানপাট লুটপাট করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এসময় বাবরা–হাচলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক পিকুল, কাক্কা মিয়া, সাহেব মোল্যা, বুলু ফকির, খালিদ শেখ, রঙ্গু শেখ, শামরুল মল্লিক, আকার মল্লিক, মোস্তাক মোল্যা, শহিদ শেখসহ আরো অনেকের বাড়িতে লুটপাঠ করে আগুন দিয়েছে উত্তেজিত জনতা।
এদিকে আহত বশির মুন্সির অবস্থা আশংকাজনক হওয়াই উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে আজ (১২ এপ্রিল) সকালে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রাশিদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। রাতে বিশৃংখলার অভিযোগে অভিযানে চালিয়ে ২০ জনকে দেশীয় অস্ত্র সহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।