মোস্তফা কামাল:
ছোট ২টা কালভাট প্রান ফিরিয়ে দিয়েছে নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের ডুংকুরিয়ার বিল এলাকার কৃষকদের । এখন এই বিল থেকে বছরে শত কোটি টাকা আয় করছে চাষীরা। অতিত সময়ে বর্ষা মওসুমে এই বিলের প্রায় পাচ হাজার একর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে থাকতো বছরের নয় মাস। ফলে বিল অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষকে নির্ভর করতে হতো এক মৌসুমে ধান চাষের উপর। আর্থিক সচ্ছলতার প্রতিবন্ধকতা ছিল জলবদ্ধতা নিস্কাসনে একটি খাল। বছর দুয়েক আগে খাল কাটা হলেও মিলছিলনা সমাধান। প্রযোজন দেখা দেয় সেতুর। গেল অর্থ বছরে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের ঐকান্তিক চেষ্টার ফলে সরকার আধা কিলোমিটার দুরত্বে ২টি কালভার্ট তৈরীতে বদলে গেছে জীবনমান, গতি পেয়েছে কৃষি অথনীতির। এখন প্রধান পেশা হয়ে ওঠেছে মৎস্য চাষ আর বাড়তি ফলছে বছরে ২ বার সোনার ফসল ধান। সোনালী দিন হাতছানি দিচ্ছে বহু বছর বঞ্চিত কৃষকদের ঘরে ঘরে।
জেলার এ অঞ্চলের কৃষকদের বহু বছরের দুঃখ ছিল বিলে জলবদ্ধতা, ভোগান্তি কমাতে দুই বছর আগে পরীক্ষামূলক ভাবে, পানি নিষ্কাশনে বিলের চারপাশে কাটা হয় একটি খাল। তাতে মেলে কিছু সমাধান। কিন্তু বাদসাদে সরাসরী যোগাযোগ। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যাতায়াত। সমস্যায় পড়ে কৃষক উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে। শুরু হয় নতুন সমস্যা সমাধানের কৌশল নিয়ে। জনপ্রতিধিদের প্রয়াস এবং রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনায় আধা কিলোমিটার দুরত্বে তৈরী করা হয় দুইটি কালভার্ট আর তাতেই মেলে সমাধান। সরকারী অর্থায়নে খালের ওপর তৈরী সেতু দিয়ে বর্ষার পানি বের হয়ে যাওয়ায় ইউনিয়নের বনখলিশাখালি, রুখালি, আকবপুর, চাকই, মধুরগাতি, বিছালি, রুন্দিয়া, হাটঘড়া ,চর-খলিশাখালি, বড়াল এই দশটি গ্রামের কৃষকদের মুখে এখন খুশির ঝিলিক। গতি পেয়েছে গ্রামীণ অথনীতির চাকায় এমনটি মত কৃষকদের।
বনখলিশাখালি গ্রামের কৃষক অসিম বিশ্বাস বলেন,আমার দশ বিঘে জমি আছে বিলির মধ্যি। বর্ষাকালে জমিতে বুক সমান জল থাকায় বছরের ছয় মাসই কোন ফসল পাই না। জমির জল বের হওয়ার কোন পথ ছিল না। গ্রামের সবাইকে নিয়ে চেয়ারমানের কাছে গেলে তিনি আমাদের যে পরামর্শ দিলেন তাতে আমরা খুবই উপকার পেয়েছি। তিনি বলেন,এখন আমরা জমিতে ধানও পাচ্ছি, আবার ঘেরের পাড়ে নানান প্রকারের শাক-সবজি লাগিয়ে বিক্রি করছি। তাতে আমাদের ছেলে মেয়েদের লেহাপড়ার পাশাপাশি সংসারও ভালো চলছে। আমাদের দীর্ঘদিনের একটা দাবী ছিল এই মাঠে যে ঘের কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত এবং ঐলাকার বিভিন্ন গ্রামের সাথে সংযোগ এই ব্রিজটা হওয়ায় কৃষি মাছ এবং একাধিক গ্রামের সাথে যে সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। আমাদের এতদিনের প্রত্যাশা পুরুন হয়েছে। এই ব্রিজটা আমাদের অভুতপুর্ন উন্নয়ন করেছে।
বিছালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক বলেন,, কৃষকরা এখন ওই বিলের প্রায় হাজার পাচেক একরে হাজার খানেক ছোট বড় ঘের কেটে মাছ চাষ করছেন। সেই মাছ এলাকার চাহিদা মোটানোর পাশাপাশি রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের চাহিদা মেটাছে নড়াইলের মাছ । পাশাপাশি ঘেরের মাঝখানে ফসলাদি ছাড়াও পাড়ে নানা ধরণের সবজি চাষ করে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে চাষীরা। আর এ পরিকল্পনায় অংশ নিতে পেরে খুশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।