হোম অন্যান্যসারাদেশ নিঃসন্তান দম্পতির চাহিদা মেটাতে বেড়েছে শিশুচুরি!

অনলাইন ডেস্ক :

নিঃসন্তান দম্পতির কাছে চাহিদা বাড়ায় শিশু চুরির হটস্পটে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রামের বন্দর ও ইপিজেড এলাকা। এক থেকে ২ বছর বয়সি শিশু টার্গেট করেই শ্রমিক অধ্যুষিত এই এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য চোর চক্র। শুধু ইপিজেড এলাকায় ৫ মাসে চুরি হওয়া ৬ শিশু উদ্ধারের মাধ্যমে ধরা পড়েছে ৬টি চক্র।

সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে শিশু চোরকে শনাক্ত করে অভিযান চালানো এখন বন্দর ও ইপিজেড থানার দৈনন্দিন রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায়ই নানা কৌশলে শিশু চুরির পাশাপাশি অপহরণের অভিযোগ আসছে এ দু’টি থানায়। তাই সার্বক্ষণিক একাধিক দলকে প্রস্তুত রাখতে হয় শুধুমাত্র শিশু চোরের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে।

কর্ণফুলী নদী ও বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী মাত্র ১০বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে দুটি সরকারি ইপিজেডের অবস্থান। এখানে কর্মরত অন্তত ৬ লাখ শ্রমিককে পরিবারসহ থাকতে হচ্ছে এ এলাকায়। চট্টগ্রামের পাশের জেলা ফেনী, নোয়াখালী এবং লক্ষ্মীপুরেই এসব শিশু চোরের আস্তানা বলে বের হয়ে আসছে পুলিশের অনুসন্ধানে।

চট্টগ্রাম ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিম বলেন ‘চুরি হওয়া এসব বাচ্চা রাস্তাঘাট বা দোকানের পাশে খেলাধুলা করে। অপহরণ চক্র এটাকে একটি কৌশল হিসেবে নিয়ে এসব বাচ্চা চুরি করে।’

চট্টগ্রাম বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘অপহৃত শিশুরা ফেনী, নোয়খালী ও লক্ষ্মীপুর এসব জেলায় চলে যাচ্ছে। এ সপ্তাহের ভেতরে দুই-তিন হাতে বদল হচ্ছে। পরে টাকার বিনিময়ে বিক্রি হচ্ছে।’

পুলিশের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে, বন্দর-ইপিজেড এলাকা থেকে চুরি হওয়া সব শিশুই দুই থেকে চারবার পর্যন্ত হাতবদল হয়েছে। সবশেষ এসব শিশুর ঠিকানা হয় নিঃসন্তান দম্পতির ঘরে। তারা ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় শিশুদের কিনে নেয়।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনার শাকিলা সোলতানা বলেন, ‘বাচ্চাগুলো অন্য কোথাও বিক্রি করে দিয়েছে বা বিদেশে পাচার করেছে এমন কোনো তথ্য আমরা পাইনি। আমাদের অনুসন্ধান থেকে তথ্য পেয়েছি, এসব শিশু নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করা হচ্ছে।’

বাংলাদেশে বিদ্যমান দত্তক আইন আরও সহজ করে শিশু চুরি ঠেকানো সম্ভব বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফরিদা ইয়াসমীন সুমী বলেন, ‘নিঃসন্তান দম্পতিদের জন্য দত্তক নেয়ার পথটা সুগম ও সহজ হলে বাচ্চা চুরির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।’

গত ৬ মাসে শিশু চুরি এবং অপহরণের অভিযোগে ৬টি দলের অন্তত ২৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া ৬ শিশুকেই হস্তান্তর করা হয়েছে পরিবারের কাছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন