আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
লোকসভা নির্বাচনের আগে নতুন করে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন প্রয়োগের চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এই আইন প্রয়োগ হলে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরাসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা মতুয়া সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। যদিও নাগরিকত্ব আইন কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে হতে পারে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনের আগেই ভারতের বিতর্কিক ‘সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট বিল ২০১৯’ বাস্তবায়ন করা হতে পারে। করোনাকালে বিরোধীদের প্রায় না জানিয়ে বিলটি পাস করে বিজেপি সরকার।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন। সেখানে স্পষ্ট করা হয়, কোন কোন ধর্মের মানুষ এই নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারবেন।
তবে যেহেতু একটি বিশেষ ধর্মকে বাদ দিয়ে এই আইন প্রণয়ন করা হয়। তাই দেশটিতে ধর্মকে স্বীকৃতি দিয়ে নাগরিকত্ব দেয়ার সিদ্ধান্তকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। ২০১৯ সালে আইন প্রণয়ন করা হলেও, আইনের বিধিবিধান তৈরি না হওয়ায় এখনো তা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।
লোকসভা নির্বাচনের আগে আইনটি ‘শতভাগ’ বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তুনু ঠাকুর। তবে শান্তুনু ঠাকুরের এই হুঙ্কারের পাল্টা জবাব দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৮ শতাংশ মতুয়া সম্প্রদায়ের। রাজ্যের ২৯৪ বিধানসভা আসনের মধ্যে ৭০টি এবং লোকসভার ১২টি আসনে সরাসরি মতুয়াদের ভোটই প্রার্থীর জয়-পরাজয় নিশ্চিত করে। আর নাগরিকত্ব সংশোধন আইন প্রয়োগের দাবি উঠেছে তাদেরই পক্ষ থেকে।
তবে তৃণমূল মনে করছে, এই আইন প্রয়োগ হলে রাজ্যের সংখ্যালঘু শ্রেণিকে ভারতীয় নন বলে পুশব্যাক করার চেষ্টা করা হবে। আর রাজ্যের ৩৪ শতাংশ ভোটারই সংখ্যালঘু। তাই মমতার দল চাইছে এই সংখ্যক ভোটারের পাশে থেকে তাদের মন জয় করতে।