হোম খুলনানড়াইল নড়াইলে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতবাড়ি দখল ও গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ

নড়াইলে হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতবাড়ি দখল ও গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 40 ভিউজ

নড়াইল প্রতিনিধি:
নড়াইল পৌরসভার উজিরপুর মৌজার ধোপাখোলা এলাকায় একটি হিন্দু পরিবারের বসতবাড়ি জোরপূর্বক দখল নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া নারকেল, পেয়ারাসহ বাড়ির একাধিক ফলদ ও বনজ গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে মোহাম্মদ উল্লাহ নামে এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে। ঘটনার পাঁচদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও আতঙ্ক কাটছে না ভুক্তভোগী পরিবারের। এদিকে, অভিযুক্ত মোহাম্মদ উল্লাহকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

ভুক্তভোগী দুলাল চন্দ্র বিশ্বাসসহ (৭২) পরিবারের সদস্যরা জানান, নড়াইল পৌরসভার ভওয়াখালী এলাকার মোহাম্মদ উল্লাহর (৪৫) নেতৃত্বে গত ১০ অক্টোবর ভোরে তাদের বসতবাড়িতে ৭০ থেকে ৮০ জন লোকজন হঠাৎ করে প্রবেশ করেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই নারকেল, পেয়ারা, সুপারি, আম, কাঁঠালসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও বনজ গাছ ইলেকট্রিক করাত দিয়ে কেটে ফেলে মোহাম্মদ উল্লাহসহ তার লোকজন। এ সময় একটি ঘরও ভেঙ্গে নিয়ে যায়। বৃদ্ধ দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস ও তার স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তাদেরকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অভিযুক্ত ও তার লোকজন পালিয়ে যায়।

তিনি আরো জানান, তার বসতবাড়ির সাড়ে ১১ শতক জমিসহ বাড়ি পাশের জমি ও পুকুর, প্রতিবেশি মান্নান ও নাসিমার জমি এবং রূপগঞ্জ বাজারের অলোক কুন্ডুর জমিসহ এক একরের বেশি জমি দখলের পায়তারা চালাচ্ছে মোহাম্মদ উল্লাহ।

ভুক্তভোগী দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাস করছি। মোহাম্মদ উল্লাহ আমাদের বাপ-দাদার বসতভিটা ও জমি থেকে উচ্ছেদ করতে চাচ্ছেন। ছেলে-মেয়ে, বউ, বেটার বউ, নাতি-পুতা নিয়ে এই বসতভিটায় আমরা বসবাস করতে চাই। আমরা বাপ-দাদার ভিটা ছেড়ে যাবো কোথায় ? বসতভিটা রক্ষায় আমরা প্রশাসন ও রাজনীতিবিদদের সহযোগিতা চাই।

দখলকৃত জমির আরেক মালিক নড়াইলের রূপগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী অলোক কুন্ডু বলেন, আমি ধোপাখোলা এলাকার বাসিন্দা তপন বিশ্বাসের কাছ থেকে সাড়ে ৪২ শতক জমি কিনেছি। হঠাৎ করে মোহাম্মদ উল্লাহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে আমার জমি দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য হেমায়েতুল হক হিমু বলেন, দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস ও অলোক কুন্ডুর জমি দখলের খবর শুনে ওইদিনই (১০ অক্টোবর) ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। এছাড়া ওই এলাকার সাবেক কমিশনার জামায়াতের নেতা রজিবুল ইসলামও ঘটনাস্থলে আসেন। আমাদের স্পষ্টকথা, এ ধরণের জবরদখল আমরা সমর্থন করি না। জোরপূর্বক গাছকাটা এবং বসতভিটা দখলের অপচেষ্টা মেনে নেয়া হবে না। প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা এ ঘটনার যথাযথ বিচার দাবি করছি।

অভিযুক্ত মোহাম্মদ উল্লাহ দাবি করে বলেন, আমি কারও জমি দখল করিনি। ধোপাখোলায় আমার ন্যায্য জমি বুঝে পেতে চাই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি সাজেদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এদিকে ভুক্তভোগীরা জানান, এর আগেও মোহাম্মদ উল্লাহর বিরুদ্ধে নড়াইল পৌরসভার ধোপাখোলার বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের বাড়ি ভাংচুর ও দখলের অভিযোগ রয়েছে। এর প্রতিবাদ এবং মোহাম্মদ উল্লাহর শাস্তির দাবিতে গত বছরের ১১ জুন দুপুরে নড়াইল আদালত সড়কে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীর পরিবারসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। তবুও আব্দুল মান্নানের সেই জমি দখল করে নিয়েছে মোহাম্মদ উল্লাহ। এখন আশেপাশের জমিও দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে মোহাম্মদ উল্লাহ। এমন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন