হোম রাজনীতি দেড় হাজার মুক্তিযোদ্ধা সেনাকর্মকর্তাকে প্রহসনের ফাঁসি দেন জিয়া

দেড় হাজার মুক্তিযোদ্ধা সেনাকর্মকর্তাকে প্রহসনের ফাঁসি দেন জিয়া

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 83 ভিউজ

রাজনীতি ডেস্ক:

জাপানি বিমান ছিনতাই করে ঢাকায় নিয়ে আসার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৯৭৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর তথাকথিত বিদ্রোহ দমনের নামে তড়িঘড়ি করে প্রহসনের বিচারে সশস্ত্র বাহিনীর দেড় হাজার সদস্যকে ফাঁসি দিয়েছেন জিয়াউর রহমান।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সংগঠন মায়ের কান্নার ব্যানারে আলোচনা সভায় এ দাবি করা হয়।

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য বলেন, ১৯৭৭ সালে তথাকথিত বিদ্রোহ দমনের নামে তড়িঘড়ি করে বিচারের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর দেড় হাজার সদস্যের ফাঁসি কার্যকর করেন জিয়াউর রহমান। সেই ঘটনায় ভুক্তভোগীদের লাশ তো বটেই, কবরেরও হদিস জানেন না পরিবারের সদস্যরা।

ইতিহাস বলে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সামরিক বাহিনীতে দুই ডজনের বেশি অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটে। এতে বিচারের নামে প্রহসনের মাধ্যমে সেসব অভ্যুত্থান নির্মমভাবে দমন করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।

এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমার ওপর নিষ্ঠুর নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। অফিসারদের ফাঁসি দেয়ার আগে যে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে সেটা ভাষায় বর্ণনার মতো নয়।’

আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘মরণোত্তর বিচারের নিয়ম নাই, তবুও আমরা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি জানাই।

পরিবারের স্বজনদের দাবি, অপরাধ না করেও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না পেয়েই করুণ পরিণতির শিকার হন কারো বাবা-ভাই।

সার্জেন্ট আবুল বাসারের মেয়ে বলেন, ‘আমার বাবা নির্দোষ ছিলেন, শুধু এটাই বলতে চাই। বাবার জন্য যে দোয়া করব, তার কবর কোথায় তা-ও জানি না।’

বিমানবাহিনীর আরেক সার্জেন্টের মেয়ে বলেন, ‘আমি যে কষ্ট করেছি তা বর্ণনাতীত। বাবা জীবিত থাকলে হয়তো আমি তা করতাম না। আমি হয়তো বিমানবাহিনীতে চাকরি করতাম। অনেক কিছু হতে পারতাম।’

আরেক ভুক্তভোগীর সন্তান বলেন, ‘আমি কি দুর্ভাগা সন্তান, আমি জানি না আমার বাবার লাশ কোথায়, বাবার কবর কোথায়।’

উল্লেখ্য, ১৯৭৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জাপানি বিমান ছিনতাই করে ঢাকায় নিয়ে আসেন জাপান রেড আর্মির কমিউনিস্টরা। সেই ঘটনার রেশ ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে। ঘটে বিদ্রোহ, পাল্টা-বিদ্রোহ।

তথাকথিত বিদ্রোহ দমনের নামে, অক্টোবর মাসজুড়ে সামরিক বাহিনীর অন্তত দেড় হাজার সদস্যকে ফাঁসি দেয়া হয়। চাকরিচ্যুতির পাশাপাশি কারাভোগ করেন আরও হাজার খানেক মানুষ। যাদের বেশিরভাগই ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা।

দীর্ঘ সাড়ে চার দশকেও সেই ঘটনার বিচার না হওয়া বাংলাদেশের জন্য লজ্জার বলেও মন্তব্য করেন স্বজনরা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন