হোম ফিচার দেশে আজ কথা বলার অধিকার নেই, গণতন্ত্র নেই, ভোটাধিকার নেই -সাতক্ষীরায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান

নিজস্ব প্রতিনিধি :

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমান বলেছেন, একটি মিথ্যা সাজানো মামলায় বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবকে সাজা দেয়া হয়েছে। ওই দিন (৩০ আগষ্ট-২০০২ তারিখে) সাবেক দুই বারের এমপি ও সাবেক ডাকসু নেতা হাবিব বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তার সাথে মিটিংয়ে ছিলেন বলে তিনি দাবী করে বলেন, কিন্তু হঠাৎ করেই দেখা গেল তার নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। এ ধরনের সাজানো ও ফরমেয়াশী মামলায় তার যে সাজা দেয়া হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি আরো বলেন, আজ দেশটা এভাবেই চলছে। দেশে আজ কথা বলার অধিকার নেই, গণতন্ত্র নেই, ভোটাধিকার নেই। যার জন্য বিএনপি আজ রাজপথে নেমেছে। সেই সাথে জনগণও রাজপথে নেমে এসছে। জনগনের দাবী অনুযায়ী যে ১০ দফা দেয়া হয়েছে। সেই ১০ দফার প্রথম দফা হচ্ছে নির্দলীয় নিরপক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারে অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। আর এই নির্বাচনে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। জনগন তারা তাদের ভোট দিয়ে নেতা নির্বাচন করবেন।

তিনি আজ সোমবার ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ী বহরে হামলার অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দুইটি মামলায় কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিয়ে বেরিয়ে এসে আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের সাথে এসব কথা বলেন। এ মামলায় তিনিসহ আসামী গোলাম রসুলের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন কলারোয়ার মোবারক আলী। সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডলের আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন। এনিয়ে এ মামলায় ২৩ জন সাফাই সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিলেন মোট ৭ জন। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী সাফাই সাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। এর আগে গত ১৬ জানুয়ারী ও ১০ জানুয়ারি ৫ জন সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা জজ আদালতের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ জানান, সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইবু্যুনাল-৩ এর বিজ্ঞ বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডলের আদালতে আসামী পক্ষের সাফাই সাক্ষ্য শুরু হয়। আসামী পক্ষে আমানউল্লাহ আমানসহ দুজন সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ মামলায় ২৩ জন সাফাই সাক্ষী দেবেন বলে আসামীপক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আদালতের কাঠগোড়ায় এ সময় কারাগার থেকে আনা সাবেক এমপি হাবিবসহ ৩৯ জন আসামী হাজির ছিলেন। এ মামলায় নয় জন আসামী পলাতক রয়েছেন। ইতিমধ্যে দুইজন কারাবন্দি অবস্থায় মারা গেছেন। রাষ্ট্রপক্ষে তিনিসহ অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলুসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, অ্যাড. আব্দুল মজিদ (২), অ্যাড. মিজানুর রহমান পিন্টু, অ্যাড. শাহানা আক্তার বকুল প্রমুখ।

প্রসঙ্গত : ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সকাল ১০টায় তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে যশোরে ফিরে যাওয়ার পথে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে কলারোয়ায় বিএনপি’র অফিসের সামনে একটি যাত্রীবাহি বাস রাস্তার উপরে আড় করে দিয়ে তার গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়। হামলায় আওয়ামী লীগের ১ ডজন নেতা-কর্মী আহত হন।

এঘটনায় দায়ের করা হামলা মামলায় ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তালা-কলারোয়ার বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জন নেতা-কর্মীকে চার থেকে ১০ বছর মেয়াদে সাজা প্রদান করেন সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ুন কবির। এর মধ্যে নয়জন আসামী পলাতক রয়েছেন ও দুই জন মারা গেছেন। গত ১৪ জুন অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের অপর দুটি মামলায় চার্জ গঠন করা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন