জাতীয় ডেস্ক:
দুবার ব্যর্থ হয়ে তৃতীয় দফায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
শনিবার (২৫ মে) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ঢাকার ডিবি প্রধান বলেন, এমপি আনারকে হত্যার পরিকল্পনা আগেও হয়েছে। নির্বাচনের আগে এবং জানুয়ারির মাঝামাঝি দেশে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। দুবার ব্যর্থ হওয়ার পর তৃতীয় দফায় তাকে হত্যা করতে সক্ষম হয় পরিকল্পনাকারীরা।
হত্যাকাণ্ডের মোটিভ কী হতে পারে–সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘স্পেসিফিক রিজন বলতে পারছি না। অনেক মোটিভ হতে পারে। পূর্বশত্রুতার জেরে হতে পারে, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত হতে পারে, রাজনৈতিক বিষয়ও থাকতে পারে। এসব বিষয় জানতে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সবকিছুই বিচার-বিশ্লেষণ করব। আসামিরা অনেক কথাই বলছে, তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করছি না।’
কলকাতায় হত্যা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা নিশ্চই আলামত পেয়েছে, এ জন্য মামলা হয়েছে। ভারতীয় পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে। হত্যাকাণ্ডের সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে তবে তদন্তের স্বার্থে এখন জানানো যাবে না।’
হারুন বলেন, ‘বাংলাদেশে ভারতীয় পুলিশের একটি টিম ২-৩ তিন ধরে তদন্ত করছে। তারা আমাদের আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আমরাও যাব। অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করছি। আমাদেরও একটি টিম কলকাতা যাবে।’
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান সংসদ সদস্য আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গে বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ আনোয়ারুল আজিম।
বাড়ি থেকে বেরোনোর পাঁচদিন পরে, গত ১৮ মে বরাহনগর থানায় আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপরও খোঁজ মেলেনি তিনবারের নির্বাচিত এই সংসদ সদস্যের। বুধবার হঠাৎ খবর ছড়ায়, কলকাতার পাশের নিউটাউন এলাকায় সঞ্জিভা গার্ডেন্স নামে একটি আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে সংসদ সদস্য আনার খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া গেছে রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি মরদেহ।
হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করার অভিযোগে গ্রেফতার সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, ফয়সাল আলী সাহাজি ওরফে তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন দেশের আদালত। অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদকে ১২ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন ভারতের বারাসাতের আদালত।