জাতীয় ডেস্ক :
নরসিংদীর বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ নেতাকর্মীরা। বুধবার (১৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে হঠাৎ করে ছাত্রলীগের দুজন কর্মী প্রথমে হাসপাতালে ঢুকে সিসিটিভির লাইন কেটে ফেলেন। পরে অর্ধশতাধিক কর্মী হাসপাতালে ঢুকে দ্বিতীয় তলার সিসিটিভির লাইনও কেটে ফেলেন এবং আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। পরে হামলাকারীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিস কক্ষে ঢুকতে চাইলে হাসপাতালের কর্মচারীরা গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় তারা ঢিল ছুড়ে হাসপাতালের অবকাঠামোর গ্লাস ভাঙচুর করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্য সরবরাহসহ তিন ক্যাটাগরিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে অন্য ঠিকাদারদের লাইসেন্সে একাধিক দরপত্র জমা দেন সভাপতি সারোয়ার হোসেন অপুসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
দরপত্র ছাত্রলীগের পক্ষের ঠিকাদারদের অনুকূলের যাচ্ছে না–এমন খবর পেয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি অপু ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিকের সহযোগীরা হাসপাতালে ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় হাসপাতালের সিসিটিভির সংযোগকারী তার ছিঁড়ে ফেলাসহ হাসপাতালের দরজা-জানালার গ্লাস ভাঙচুর এবং হাসপাতালের ভেতরে রক্ষিত বিভিন্ন সরকারি সম্পদ নষ্ট করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন অপু ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিক এবং তাদের সহযোগীরা হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
এই হামলার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেবাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। এ সময় হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন করেন তারা।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন অপু বলেন, ‘কোনো হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। ছাত্রলীগের কয়েকজনের সঙ্গে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে বাগ্বিতণ্ডার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তাদের সরিয়ে নিয়ে আসি।’
হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহকারী এক ঠিকাদার বছরের পর বছর ধরে কাজ করে আসছেন বলেও অভিযোগ তার। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হয় বলে দাবি তার।
হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নূর আসাদুজ্জামান।
নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডা. মো. নূরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালে হামলার ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নূর আসাদুজ্জামান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এতে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০ জন দুষ্কৃতকারীকে আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদকে ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।