আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
পাকিস্তানের তীব্র প্রতিবাদের পর পরমাণু অস্ত্র সম্পর্কিত বক্তব্য বদলে ফেলল যুক্তরাষ্ট্র। পাকিস্তানকে ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ’ বলে অভিহিত করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেয়া বক্তব্য থেকে সরে এসে দেশটি এখন বলছে, পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়ে পাকিস্তানের যে সামর্থ্য রয়েছে সে ব্যাপারে ওয়াশিংটনের আস্থা আছে। খবর ডনের।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমা দেশগুলোও। কেন না ইউক্রেনকে সামরিক থেকে শুরু করে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলো। পশ্চিমা দেশগুলোর এ সহায়তার কারণে বাড়ছে সামরিক উত্তেজনা। পশ্চিমা দেশগুলোর আশঙ্কা, যে কোনো মুহূর্তে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই অস্ত্র ইউক্রেনে নয়, লক্ষ্যবস্তু হতে পারে ইউরোপের কোনো দেশ।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আলটপকা মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) ক্যালিফোর্নিয়ায় এক সমাবেশে বাইডেন বলেন, ‘আমার মনে হয়, পাকিস্তান হয়তো বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলোর মধ্যে একটি। কারণ দেশটির হাতে থাকা পরমাণু অস্ত্রের কোনো সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ নেই।’
বাইডেনের এমন মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় পাকিস্তান। বাইডেনের বক্তব্যকে ‘বেঠিক ও বিভ্রান্তিকর’ অভিহিত করেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এমনকি ইসলামাবাদে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকেও তলব করে দেশটির সরকার।
পাকিস্তানের তীব্র প্রতিবাদের মুখে বক্তব্য সংশোধন করতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (১৭ অক্টোবর) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, পরমাণু সম্পদের সুরক্ষায় পাকিস্তানের অঙ্গীকার ও সামর্থ্যের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আস্থা রয়েছে।
এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলেটের সঙ্গে বৈঠক করেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মাসুদ খান। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা শোলেটই প্রথম বৈঠকের বিষয়টি জানান।
বাইডেনের মন্তব্যের বিষয়ে এক সাংবাদিক দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘এখানে বলার মতো সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য আমার কাছে নেই। তবে পরমাণু সম্পদের সুরক্ষায় পাকিস্তানের অঙ্গীকার ও সামর্থ্যের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আস্থাশীল।’
মুখপাত্র আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সব সময় নিরাপদ ও সমৃদ্ধ পাকিস্তানকে মার্কিন স্বার্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখে থাকে। আরও বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে, পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের এই দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।’
যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের মধ্যে এ নিয়ে নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে উল্লেখ করে এই মুখপাত্র বলেন, ‘দুই দেশের এই সম্পর্ককে আমরা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখি। এটি এমন বিষয় যে আমরা নিবিড়ভাবে যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে যাচ্ছি।’