আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্বের যে কোনও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণের দাবি করেছে রাশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রবিবার (২৬ অক্টোবর) জানিয়েছেন, শিগগিরই বুরেভেস্তনিক নামের পারমাণবিক শক্তিচালিত ক্রুজ মিসাইল মোতায়েনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধে দায়িত্বরত রুশ সামরিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন বলেন, বুরেভস্তনিকের মতো ‘অনন্য’ অস্ত্র বিশ্বে কারও কাছে নেই। রুশ বিশেষজ্ঞরা একসময় এই অস্ত্র তৈরির ব্যাপারে সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু অবশেষে ক্ষেপণাস্ত্রটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষামূলক ধাপ পার করেছে।
বুরেভেস্তনিকের অস্ত্র তালিকায় শ্রেণিবিন্যাস এবং মোতায়েনে প্রয়োজনীর পদক্ষেপ নিতে সেনাপ্রধানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
মস্কো ক্ষেপণাস্ত্রটির আনুষ্ঠানিক দিয়েছে নাম নাইন এম ৭৩০ বুরেভেস্তনিক এবং চলতি নাম স্টর্ম পেটরেল। পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর এটির নামকরণ করেছে এসএসসি এক্স নাইন স্কাইফল।
পুতিনকে দেশটির সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ জানিয়েছেন, গত ২১ অক্টোবরের পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণে ক্ষেপণাস্ত্রটি ১৪ হাজার কিলোমিটার অতিক্রম করে। এটি সে সময় অন্তত ১৫ ঘণ্টা শূন্যে অবস্থান করেছিল।
ক্ষেপণাস্ত্রটি পুরোপুরি পারমাণবিক শক্তিচালিত উল্লেখ করে গেরাসিমভ আরও বলেছেন, এবারের পরীক্ষা অন্যসময়ের চেয়ে আলাদা ছিল, কারণ বুরেভেস্তনিক দীর্ঘসময় শূন্যে অবস্থান করেছে। এটি যে কোনও প্রতি-ক্ষেপণাত্র (অ্যান্টি মিসাইল) ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম বলেও দাবি করেন তিনি।
রাশিয়ার দাবি, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ যে কোনও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য বুরেভেস্তনিক অপ্রতিরোধ্য। যে কোনও দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রটির উড্ডয়নের পথ (ফ্লাইট পাথ) অনুমান করাও যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।
এর আগে বুধবার, রুশ সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও কমান্ড কাঠামো যাচাইয়ের জন্য আয়োজিত এক মহড়া পর্যবেক্ষণ করেছেন পুতিন। ওই মহড়ায় জল-স্থল-আকাশে কৌশলগত পারমাণবিক বাহিনীর সক্ষমতা যাচাই করা হয়।
ওই মহড়ায় পুতিন দাবি করেন, তথাকথিত আধুনিকতার বিচারে রাশিয়ার পারমাণবিক নিবৃত্তকরণ ক্ষমতা (নিউক্লিয়ার ডেটারেন্স ফোর্স) এখন বিশ্বে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। রুশ ফেডারেশন ও ইউনিয়ন স্টেটের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৌশলগত বাহিনী পুরোপুরি সক্ষম।
ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টসের (এফএএস) হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের ৮৭ শতাংশই রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ভাণ্ডারে রয়েছে, যা পৃথিবীকে একাধিকবার ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট। রাশিয়ার হাতে রয়েছে পাঁচ হাজার ৪৫৯টি পারমাণবিক ওয়ারহেড, আর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে পাঁচ হাজার ১৭৭টি।
