আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া সাবমেরিনের সব আরোহীই মারা গেছেন। তাদের মরদেহ পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে সবার মনে জল্পনা-কল্পনা। তবে মার্কিন কোস্টগার্ড বলছে, মরদেহ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। খবর বিবিসির।
এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার বলেন, মরদেহের সন্ধান অব্যাহত থাকবে। তবে এটি একটি ‘অবিশ্বাস্যভাবে জটিল পরিবেশ’ সমুদ্রের তলায়, ভূপৃষ্ঠের দুই মাইল নিচে। এমন পরিবেশে মরদেহগুলোর সন্ধান করা অনেক চ্যালেঞ্জিং এবং না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ চালিয়ে যাব। কিন্তু তাদের মরদেহ বা কোনোকিছু পাওয়া যাবে কি না, এমন সম্ভাবনার কোনো উত্তর নেই।’
কোস্টগার্ডের এ কর্মকর্তা জানান, টাইটানিকের চারপাশে সমুদ্রের তলায় চলাচলকারী রিমোট অপারেটিং ভেহিকল (আরওভি) ঘটনাস্থলেই থাকবে।
তিনি বলেন, টাইটানিক সাইটের চারপাশে ধ্বংসাবশেষের মধ্যে পাঁচটি বড় টুকরো শনাক্ত করা হয়েছে। আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য কাজ করা হচ্ছে। কীভাবে, কেন এবং কখন এটি ঘটেছে সেসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনা কোনোভাবেই ভুলে যাওয়ার মতো নয় জানিয়ে জন মাগার ওই সাবমেরিনের পাঁচ আরোহীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, ‘ইউএস কোস্টগার্ড এবং সমগ্র ইউনিফাইড কমান্ডের পক্ষ থেকে মারা যাওয়া আরোহীদের পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’
পাঁচ-ছয় দিন ধরেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হারিয়ে যাওয়া ডুবোযান টাইটান। রোববার (১৮ জুন) ওশানগেটের সাবমারসিবল ডুবোযান টাইটান পাঁচ আরোহী নিয়ে কানাডা উপকূলীয় আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে যায়। এর ঠিক পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর থেকে এটিকে খোঁজার সব রকমের চেষ্টা চালান মার্কিন কোস্টগার্ডের পাশাপাশি কানাডার কোস্টগার্ডের সদস্যরা।
অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বেশ কয়েকটি উদ্ধারকারী জাহাজের সমন্বয়ে চলে শ্বাসরুদ্ধকর এই অভিযান। শেষ সময়ে এসে বাড়ানো হয় অভিযানের ব্যাপ্তিও। আটলান্টিকের তলদেশের প্রায় ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে চালানো হয় চূড়ান্ত পর্বের অভিযান। একই সঙ্গে আনা হয় পানির তলদেশে চলাচলে সক্ষম ভিক্টর ৬০০০ নামে রোবোটিক্যালি অপারেটেড ফরাসি ভেহিকেল, যা কিনা ডুবোযানটিকে পানির ওপর ভেসে উঠতে বাধাদানকারী কোনো কিছু শনাক্ত হলে সেটিকে সরিয়ে ফেলতে সক্ষম। এই অনুসন্ধানে বৃহস্পতিবার সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় মার্কিন কোস্টগার্ড।