হোম ফিচার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে একটু কম মূল্যে পণ্য পেতে স্বল্প আয়ের মানুষের লড়াই, দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে খালি হাতে ফিরছেন অনেকে

শিপলু জামান, ঝিনাইদহ :

একের পর এক বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। করোনায় কাবু মানুষের জন্য এ-এক দুঃসহ যন্ত্রণা। আয় কমে যাওয়া মানুষের হিমশিম অবস্থা। নিত্যপণ্য কিনতে গিয়ে হা-হুতাশ এখন নিত্যদিনের চিত্র। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে স্বল্প আয়ের মানুষের সারি দীর্ঘ হচ্ছে টিসিবি’র ন্যায্যমূল্যের ট্রাক পয়েন্টে ও দোকান গুলোতে। কম দামের পণ্য কেউ পাচ্ছে, কেউ পাচ্ছে না। পণ্যের জন্য ট্রাকের পেছনে দৌড়ানো, পণ্য না পেয়ে আকুল কান্নার করতে দেখা গেছে । বলা হচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে।

আদতে বাজারে এর কোনো লক্ষণ এবং প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। কালীগঞ্জ শহরের পুরাতনবাজার, নতুনবাজার, নিমতলাবাজার, সহ এখন ভোজ্য তেল রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে। । চাল, ডাল, পিয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যেরই দাম বাড়তির দিকে। । সরকারি সংস্থা টিসিবি’র হিসাবে গত এক মাসের ব্যবধানে অন্তত ৩১ টি পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে একশ’ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়েছে এমন পণ্যও আছে। বাড়তি দামের কারণে নিম্ন্ন আয়ের মানুষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে । কালীগঞ্জে শহরে ৪ টি এলাকায় টিসিবি পন্য বিক্রয় করা হয় । অনেকে রাতের আধারে চুরি করে অতি মুনাফা লাভের আশায় পাইকারী দোকানে বিক্রয় করে থাকেন অসাধূ টিসিবি ডিলার । ৩নং ওয়ার্ডে ফয়লা রোডে টিসিবি পন্য ক্রয়কারী মিলন হোসেন বলেন, আসন্ন রমজানে পরিস্থিতি কোথায় দাঁড়ায় এ নিয়ে চিন্তিত । ফয়লা গ্রামের রমেচা বেগম বলেন, ভোর থেকে লাইনে দাড়ীয়ে আছি দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে বাড়ী ফিরে যাচ্ছি । বারবাজার মন্টু বলেন, পন্য না পেয়ে খালি হাতে বাড়ী চলে যাচ্ছি।

বৃহঃবার সকালে কালীগঞ্জ পুরাতন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পিয়াজের দাম। এক মাসের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে মান ভেদে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। এছাড়া ভোজ্যতেল, আটা-ময়দা, ডাল, চিনিসহ বেড়েছে অন্তত ৩১টি পণ্যের দাম। তবে টিসিবি’র দর ও বাজারের বাস্তব চিত্রের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। সংস্থাটি বর্তমানে ভোজ্য তেলের দাম ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা বললেও, বাজারে এর দাম ১৮০ থেকে প্রায় ২০০ টাকায় ঠেকেছে।

গতকাল টিসিবি’র সর্বশেষ বাজার দর অনুযায়ী, বর্তমানে সরু চালের কেজি (নাজির/মিনিকেট) ৬২ থেকে ৭০ টাকা। যা এক মাস আগে ছিল ৬০ থেকে ৬৮। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। সাদা আটা (খোলা) প্রতি কেজি’র বর্তমান মূল্য ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা। এক মাস আগের মূল্য ৩৩ থেকে ৩৬ টাকা। এক মাসে বেড়েছে ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ময়দা (খোলা) বর্তমান মূল্য ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। আগের মূল্য ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ময়দা (প্যাকেট) এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আগে ছিল ৫২ থেকে ৬০ টাকা। বেড়েছে ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

সয়াবিন তেল (লুজ) প্রতি লিটারের বর্তমান মূল্য ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। এক মাস পূর্বের মূল্য ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। পাম অয়েল (লুজ) বর্তমান মূল্য ১৫০ থেকে ১৫৮ টাকা। আগে ১৩৪ থেকে ১৩৬ টাকা। বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। পাম অয়েল (সুপার) বর্তমান ১৫৫ থেকে ১৬৩ টাকা। আগে ১৩৬ থেকে ১৪০ টাকা। বেড়েছে ১৫ দশমিক ২২ শতাংশ ।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন বলেন, বাজারে মোবাইল টিম কাজ করছে কোন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।

 

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন