হোম ফিচার ঝিকরগাছার বাঁকড়ায় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গা ভূমিদস্যুদের দখলে

ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধি :

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়ায় আনন্দময়ী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গা ভূমিদস্যুদের দখলে। বারবর উচ্ছের পরিকল্পনা হলেও আলোর মুখ দেখেনি!

কয়েক দফা সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ জেলা পরিষদ উদ্যোগ নিলেও তাদের কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে। এবারও জেলা পরিষদ ও স্বাস্থ্য বিভাগ আইনের পথে উচ্ছেদের পরিকল্পনা নিয়েছে। উচ্ছেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে, না-কি পূর্বের ন্যয় আবার মুখ থুবড়ে পড়বে এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে।স্বাস্থ্য বিভাগ প্রাথমিক অবস্থায় উচ্ছেদ বাস্তবায়নের দায়িত্ব উপজেলা পরিষদকে দিয়েছিল। এ সংক্রান্ত চিঠি উপজেলা পরিষদ পেলেও অধিক সময় পার হয়ে গেছে, বাস্তবায়ন লক্ষ্য করা যায়নি। আবারও জেলা পরিষদ জোরেশোরো আইনই প্রক্রিয়ায় ভুমিদদস্যু ও দখলদার দের কবল থেকে উপস্বাস্থা কেন্দ্রের জায়গাটি দখল মুক্ত করবেন বলে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন।

ঝিকরগাছা উপজেলা দক্ষিণে বাঁকড়া বাজার সংলগ্ন বাজারের উত্তর প্রান্তে প্রায় এক একর জমির উপর শতবর্ষে অধিক সময় ধরে এলাকার সাধারণ দরিদ্র ও জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এই বাঁকড়া আনন্দময়ী স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রটি। এ সেবা কেন্দ্রটি থেকে কপোতাক্ষ নদের এপার ঝিকরগাছা ও ওপার মণিরামপুরে দরিদ্রজনগোষ্ঠী বিনা মূলে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে আসছে।

বাঁকড়া বাজার সম্প্রসারণ ও কপোতাক্ষ নদে ব্রীজ হওয়ার পর চিকিৎসা কেন্দ্রে রাস্তা বরাবর ও কপোতাক্ষ ধার ঘেষে প্রথমে টোল দোকান পরবর্তীতে স্থপনা তৈরি করেছে। ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের রায়পটন গ্রামের আতিয়ার মোড়লের ছেলে আলহাজ্ব হবিবর রহমান (মেনু) ও একই গ্রামের আঃ আজিজ মেম্বরের ছেলে শহিদ হোসেন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জমিটির ভূয়া একটা রেকর্ড করে জোর করে স্থপনা তৈরি করে অগ্রীম চাঁদা নিয়ে ভাড়া দিয়েছে।

ওদিকে একই ইউনিয়নের হাজিরবাগ গ্রামের খাইরুল ইসলাম, বাবলুর রহমান ও রমজান আলী জোর করে কপোতাক্ষ নদের পূর্ব পাশে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গা দখল করে দোকার ঘর নির্মাণ করে অগ্রীম চাঁদা নিয়ে দোকন ঘর ভাড়া দিয়েছেন।

এ বিষয়ে হাজিরবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান (মিন্টু) জানান, শত বছরের পুরাতন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বাঁকড়া তথা শংকরপুর, হাজিরবাগ ও হরিহরনগর ইউনিয়নের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একমাত্র সেবা কেন্দ্র হিসাবে এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি থেকে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে থাকেন। দুঃখের বিষয় কতিপয় দুসকৃত কয়েকজন মিলে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রর জায়গা টি ভূয়া কাজগ তৈরি করে দখল নিয়েছে ও স্থাপনা তৈরি করে অগ্রীম চাঁদা নিয়ে ভাড়া দিয়েছে।

সরজমিনে এসে দোকানদারদের কাছ থেকে আমি শুনেছি মাসিক চাঁদা না দিলের দখলদারা দোকনারদের বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ ও মাটপিট করে। আমি বিষয়টা শুনে নির্বাহী কর্মকতা, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকতা ও সিভিল সার্জন, জেলা পরিষদকে বিষয়টি জানায়। দখলদারদের কবল থেকে উপস্বাস্থ্য কেন্দের জায়গাটি দখল মুক্ত করার জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের জোর দাবি যানিয়েছি।

বাঁকড়া বাজারের বারবার নির্বাচিত সাবেক বাঁকড়া বাজার কমিটির সভাপতি ডাঃ মোস্তফা আসাদুর জামান আসাদ জানান, কিছু সংখ্যক ভূমিদস্যু ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের রায়পটন গ্রামের আতিয়ার মোড়লের ছেলে হবিবর রহমান (মেনু) ও একই গ্রামের আঃ আজিজ মেম্বরের ছেলে শহিদ হোসেন জানতে পেরেছি এক একর ৪৪ শতক জমির ভিতরে রেকর্ড ও দলিল করে নিয়েছে, কিভাবে দলিল করেছে আমরা জানিনা। তারা অবৈধ ভাবে স্থাপনা তৈরি করে অগ্রীম চাঁদা নিয়ে ভাড়া দিয়েছে, এত করে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে পরিবেশ টা নষ্ট হয়েছে। তারা অবৈধ দখলদার হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে চাচ্ছে। এই জনপদের মানুষ হিসাবে কতৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন জানায় উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গাটি অবৈধ দখলদাদের কবল থেকে স্থপনা উচ্ছেদ করার জন্য সিভিল সার্জন যশোর, জেলা পরিষদ যশোর কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও অবসর প্রাপ্ত উপধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ মানবধিকার কল্যাণ র্টাস্ট বাঁকড়া আঞ্চলিক শাখার সভাপতি গাজী আঃ সাত্তার জানান, বাঁকড়া তথা দক্ষিণ অঞ্চলের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্রটি এই চিকিৎসা কেন্দ্রর সম্পত্তি ভূমিদস্যু দের দখলে। এই সম্পত্তি দখলদার হাত থেকে ভুমি মন্ত্রনালয়, সিভিল সার্জন, জেলা পরিষদ ও এসিলন্ট মহোদয়ের কাছে আকুল আবেদন এই দখলদারদের কবল কাছ থেকে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গাটি অবমুক্ত করে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য পান্না খাতুন জানান আমরা অভিযোগ পেয়ে, জেলা পরিষদের টিম ও প্রশাসনিক কর্মকতা সহ বাঁকড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে ঘটনার সত্যত্য নিশ্চিত জানতে পারি। যে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গাটি রায়পটন গ্রামের আতিয়ার মোড়লের ছেলে আলহাজ্ব হবিবর রহমান (মেনু) ও একই গ্রামের আঃ আজিজ মেম্বরের ছেলে শহিদ হোসেন ভূয়া দলিল ও রেকর্ড করেছে বলে জানতে পারি, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে পূর্ব পাশে হাজিরবাগ গ্রামের খাইরুল ইসলাম, বাবলুর রহমান ও রমজান আলী স্থাপনা তৈরি করে অগ্রীম চাঁদা নিয়ে ভাড়া দিয়েছে, অচিরে আইনই প্রক্রিয়ায় যথাযথ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন