খেলাধূলা ডেস্ক:
নিজেদের অঞ্চলভিত্তিক ক্রিকেট চিন্তা থেকে বের হতে না পারলে উইন্ডিজ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। গায়ানা বা অ্যান্টিগা নয়, সবাইকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য ক্রিকেট খেলতে হবে। তাহলেই যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে উত্তরণ সম্ভব। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ে এভাবেই নিজেদের ক্রিকেট কাঠামো এবং তার সমস্যাগুলো নিয়ে মতামত দিয়েছেন জেসন হোল্ডার। সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাইলেও সতীর্থদের ঠিকই শুলে চড়ান হোল্ডার।
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটার পর নিশ্চিতভাবেই মনের কোণে ডুকরে কেঁদেছেন ব্রায়ান লারা। আজীবন বিনোদন দেয়ার জন্যই যারা ক্রিকেট মাঠে নামতেন সেই গ্যারি সোবার্স, ভিভ রিচার্ডস, কোর্টনি ওয়ালসরা হয়তো হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন। যাক, আর নিচে নামতে হচ্ছেনা উইন্ডিজ ক্রিকেটকে। ইয়ান বিশপ তো বলেই দিয়েছেন, এর চেয়ে নিচে নামা আর সম্ভব নয়। এটাই টানেলের শেষ বিন্দু।
ড্যারেন স্যামির অবাক দৃষ্টি কিংবা কার্ল হুপারের ভেজা চোখ হয়তো কিছুটা হৃদয়বিদারক-ই। কিন্তু বাস্তবতার প্রেক্ষিতে উইন্ডিজ ক্রিকেটের সমস্যা উত্তরণে তার একটুও গুরুত্ব নেই। কারণ শেই হোপ এবং নিকোলাস পুরানরা তো এই ক্যারিবিয়ান স্বত্বার সঙ্গেই পরিচিত নন। তারা সবাই এই দ্বীপরাষ্ট্রের পার্ট টাইম পারফর্মার। তাদের আসল জায়গা তো ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট।
কথাগুলো তেতো হলেও উইন্ডিজের ক্রিকেটে এটাই সত্যি। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে তাই সতীর্থদের ওপর এভাবেই নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিলেন জেসন হোল্ডার। হাসতে হাসতে জানালেন, এ সমস্যার থেকে আদৌ মুক্তি সম্ভব কিনা সেটা জানেন না তিনি।
হতাশা নিয়ে হোল্ডার বলেন, ‘আমরা বেশিরভাগ সময় এটাকে ব্যক্তিগত ইভেন্ট মনে করি। মনে করি, এটা আমাদের দ্বীপের কোনো বিষয়। কিন্তু এটা তো তাই নয়। এটা একটা টিম গেইম। এখানে যা করতে হবে তা একসঙ্গে সবাইকে করতে হবে। সবার মনোভাব একরকম হতে হবে। কিন্তু এই দলটায় সেটার বড় অভাব। এখানে সবাই খেলে নিজের জন্য। এটা থেকে মুক্তি না মিললে, কোন পরিকল্পনাতেই লাভ হবে না।’
তবে এখনই যে সব শেষ হয়ে গেছে, সেটা মানতে নারাজ হোল্ডার। ড্যারেন স্যামি কিংবা কার্ল হুপারদের নিয়ে নিকোলাস পুরানের অধিনায়কত্বে আবার নতুন করে শুরু করার কথা জানান তিনি। পরিকল্পনা করে তরুণদের সুযোগ দিলে উইন্ডিজ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ আবারও ঝলমলে হয়ে উঠবে বলেও বিশ্বাস করেন সাবেক এ অধিনায়ক।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না এটাই শেষ। আমাদের অনেক তরুণ ক্রিকেটার আছে। পুরান দুর্দান্ত খেলছে। টিম ম্যানেজমেন্টে পরিবর্তন এসেছে। এদের সময় দিন, এরা আপনাকে নতুন সময়ে এনে দেবে। তাড়াহুরা করতে গেলে সব নষ্ট হয়ে যাবে।’
বাছাইপর্বের বাকি ম্যাচগুলোর পর চলতি মাসেই নিজেদের মাঠে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট, টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে সিরিজ খেলবে উইন্ডিজ।