হোম আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তনে ১০০ কোটি মানুষের অকাল মৃত্যু হতে পারে: গবেষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অন্তত ১০০ কোটি মানুষের অকাল মৃত্যু হতে পারে। এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষকরা বলছেন, বলছেন, ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উষ্ণতা যদি দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায় তাহলে আগামী একশ বছরে এই বিশাল সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

মূলত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারে কার্বন নিঃসরণের কারণে দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে। যার মোকাবিলার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এটাকে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার হ্রাসের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বাজে প্রভাব মোকাবিলার প্রধান উপায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা তেমন আশা দেখছেন না। বলছেন, আগামী চার বছরের মধ্যেই এ তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রথমবারের মতো ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, কার্বন নিঃসরণের ৪০ শতাংশের জন্য দায়ী তেল ও গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি। যা কোটি কোটি মানুষের জীবনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এসব মানুষের বেশিরভাগই বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করে জলবায়ু পরিবর্তনে যাদের প্রায় কোনো দায় নেই।

জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে পরিবেশ বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা বহু দিন ধরেই জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন। ‘এনার্জিস’-এ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণাতেও এ বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে কঠোর জ্বালানি নীতি প্রস্তাব করা হয়েছে। যাতে কার্বন নিঃসরণ কমানো ও বৈশ্বিক অর্থনীতিকে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যায়। যার লক্ষ্য মানুষের মৃত্যু কমিয়ে আনা।

সেই লক্ষ্যে সরকার, করপোরেট ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এক হাজার টন জীবাশ্ম কার্বন নিঃসরণে একজনের অকাল মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিওর অধ্যাপক জশুয়া পিয়ার্স বলেন, ‘যদি আপনি এই ‘এক হাজার টন’ এর বৈজ্ঞানিক সূত্রটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন এবং হিসাব করেন, দেখবেন আগামী শতকে ১০০ কোটি মানুষের অকাল মৃত্যু হতে পারে। তাই আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে এবং দ্রুত নিতে হবে।’

পিয়ার্স আশা করছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতার ভয়াবহতা নতুন আঙ্গিকে ও হিসেবে সবার সামনে তুলে ধরলে হয়তো নীতিনির্ধারক ও ব্যবসায়ী নেতারা বুঝবে যে মানবজাতি কতটা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের মডেল ও পূর্বাভাস যেহেতু এখন অনেকটাই পরিষ্কার, তাই এটা স্পষ্ট যে আমাদের সন্তান ও ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের পদক্ষেপের ওপর কতটা নির্ভরশীল।

গবেষকরা আরও বলছেন, পদক্ষেপ ও ফলের এই সম্পর্ক যখন সবাই বুঝতে পারবেন তখন গ্রিনহাউস গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাব আর কেউ উপেক্ষা করতে পারবে না। গবেষণায় দেখা যায়, ভবিষ্যত প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এখনই কমাতে হবে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি বা সবুজ জ্বালানি ব্যবহার করতে হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন