জাতীয় ডেস্ক:
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন করেছে। এ উপলক্ষে বিজিবি সদর দফতরসহ বাহিনীর সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটে বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করা হয়।
দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বিজিবি সদর দফতরসহ সব ইউনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এর আগে প্রত্যুষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান, বিজিবিএম, বিএএম, এনডিসি, পিএসসি উপস্থিত ছিলেন।
পরে সকাল পৌনে ৮টায় পিলখানায় ‘সীমান্ত গৌরব’-এ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিজিবি মহাপরিচালক। এ সময় বিজিবির একটি চৌকশ দল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করে। বাদ জোহর বিজিবির সব মসজিদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্ট শাহাদতবরণকারী তার পরিবারের সদস্য এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত, জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং বিজিবির উত্তরোত্তর অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
এ ছাড়া সদর দফতরসহ সারা দেশে বিজিবির বিভিন্ন স্থাপনায় বর্ণিল আলোকসজ্জা করা হয়। পিলখানাসহ বিজিবির সব ইউনিটে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়।
পিলখানায় প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালকমেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান বলেন, আজকের দিনটি বাঙালি জাতির জন্য একটি উল্লাসের দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। আর এই স্বাধীনতা অর্জনে এ বাহিনীর অবদান ছিল অনবদ্য ও অবিস্মরণীয় । ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা তৎকালীন ইপিআরের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে বাংলার কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র-জনতা সবাই একত্রে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এই বাহিনীর দুজন বীরশ্রেষ্ঠসহ ৮১৭ জন অকুতোভয় বীরযোদ্ধা শাহাদতবরণ করেন, যা এই বাহিনীর জন্য অত্যন্ত সম্মান ও গৌরবের।
তিনি বলেন, ২২৮ বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্যে লালিত ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকেই বিজিবি দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা, সীমান্ত সুরক্ষা, অবৈধ চোরাচালান ও মাদক পাচার রোধসহ বিভিন্ন আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে আসছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা, দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান, দেশগঠন ও বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে বিজিবির অনবদ্য ভূমিকা আজ সর্বমহলে প্রশংসিত। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবির ওপর অর্পিত যে কোনো দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করার আহ্বান জানান বিজিবি মহাপরিচালক।