হোম জাতীয় চোর সন্দেহে যুবককে পেটালেন আওয়ামী লীগ সভাপতি, ভিডিও ভাইরাল

জাতীয় ডেস্ক:

নারায়ণগঞ্জে চুরির অপবাদে প্রকাশ্যে এক যুবককে প্রায় নগ্ন করে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে জেলার ফতুল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিছির আলীর বিরুদ্ধে। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে তাদেরও মারধর করেন তিনি।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাতে সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার ইসদাইর এলাকায় এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে ঘটনাটি বেশ কিছুদিন আগের বলে দাবি করছে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা মিছির আলী।

ভাইরাল হওয়া ৫৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় এক যুবককে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা মিছির আলী। এ সময় আশেপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে পেটানোর কারণ জিজ্ঞেস করলে যুবকের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির চেষ্টার অভিযোগ তোলেন তিনি। এসময় ওই যুবককে নগ্ন করতে জামা খুলে লুঙ্গি টানাটানি করেন তিনি। কোনভাবে লুঙ্গি টেনে ধরে ইজ্জত রক্ষা হয় যুবকের। তবে এ অবস্থাতেই চলতে থাকে লাঠিপেটা। অকথ্য ভাষায় গালাগালও করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতির এমন কাণ্ডে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। তাদের দাবি, সরকার দলের প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধি হওয়ায় গায়ের জোরে এমন অমানবিক কাজ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা মিছির আলী।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অহেতুক মিছির আলী হঠাৎ করে ইসদাইর বাজারের সঙ্গে রেল লাইনের পাশে এসে এক যুবককে তার মোবাইল ফোন পকেট থেকে টান দেয়ার কথা বলেই মারধর শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় একজন তাকে থামাতে গেলে তাকেও মারধর করা হয় বলে জানিয়েছেন উপস্থিত অনেকে।

এ ব্যাপারে হাজী মিছির আলী জানান, ঘটনাটি ১২-১৫ দিন আগের।

তিনি দাবি করেন, ইসদাইর বাজারস্থ মসজিদে জহুর নামাজ শেষ করে বের হয়ে ভ্যানগাড়িতে করে বিক্রি করা পেয়ারা কিনছিলেন। এ সময় তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে একটি ছেলে পালিয়ে যাচ্ছিল। সে বিষয়টি টের পেয়ে ছেলেকে হাতেনাতে ধরে ফেলে এবং মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে। পরে চোরটিকে সামান্য মারধর করে ছেড়ে দেয়া হয়। কেউ হয়তো তখন উদ্দেশ্যমূলক ভাবে ভিডিওটি করে রেখেছিল। পরবর্তীতে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া জানান, এ বিষয়ে কেউ থানা পুলিশকে অবগত বা অভিযোগ করেনি। যদি কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তাহলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল হাই সময় সংবাদকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি এমন কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে অন্যায় হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এছাড়া ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে। আমি ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলে বিস্তারিত জানবো।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন