আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
চেক রিপাবলিকের রাজধানী প্রাগে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ করেছেন দেশটিতে বসবাসরত রাশিয়ার নাগরিকেরা। শনিবার (২৬ মার্চ) এ বিক্ষোভে যুদ্ধবিরোধী স্লোগান-সংবলিত প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন নিয়ে প্রতিবাদ জানান অংশগ্রহণকারীরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শনিবার (২৬ মার্চ) প্রাগের রাস্তায় নেমে আসেন চেক রিপাবলিকে অবস্থানরত রুশ নাগরিকেরা।
বিক্ষোভকারীরা মধ্য প্রাগের ‘পিস স্কয়ার’ থেকে মিছিল শুরু করেন। অন্তত তিন হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে বলে জানায় স্থানীয় পুলিশ। তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে রাস্তায় এগিয়ে যান। এসময় বিক্ষোভকারীরা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ছবির ওপর ‘খুনি’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে ‘যুদ্ধ চাই না’ স্লোগান দেন। বার্তা সংস্থা বিবিসি জানায়, বিক্ষোভকারীরা প্রাগে অবস্থিত রুশ দূতাবাসের সিঁড়িতে প্রতীকী রক্ত বোঝাতে লাল রং ছিটিয়ে দেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করেই পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ অভিযান। ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে রক্ষা করার জন্যই ‘বিশেষ সামরিক পদক্ষেপ’ নামে অভিযান শুরু করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
চেক রিপাবলিকে অন্তত ৪৫ হাজার রুশ নাগরিক বসবাস করেন। যা সাবেক কমিউনিস্ট-শাসিত দেশটিতে চতুর্থ বৃহৎ সম্প্রদায়। ইউক্রেনে হামলা শুরুর আগে চেক রিপাবলিকে দুই লাখের মতো ইউক্রেনীয়দের বসবাস ছিল। হামলার পর নতুন করে তিন লাখ ইউক্রেনীয় দেশটিতে পালিয়ে এসেছে বলে ধারণা করছে চেক রিপাবলিকের সরকার।
বিক্ষোভের আয়োজন করেন আন্তন লিৎভিন নামে এক রুশ নাগরিক। তিনি বলেন, আমরা আমেরিকা ও ইউরোপের বিরুদ্ধে চেক রিপাবলিক ও চেক জনগণকে যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখাতেই এ আয়োজন করেছি। প্রাগের বিক্ষোভকারীরা বলেন, রাশিয়ার জনগণও এমনটা মনে করে, কিন্তু বলতে পারছে না। আন্তন লিৎভিন আরো বলেন, এ বিক্ষোভের মাধ্যমে বিষয়টি আমরা তুলে ধরতে পেরেছি বলে বিশ্বাস করি।
প্রায় ১৫ বছর ধরে দেশটিতে অবস্থান করা এক সাবেক সেনা সদস্য বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, রুশ বলেই আমরা যুদ্ধের পক্ষে, বিষয়টি এমন নয়। আমরা যুদ্ধের বিরুদ্ধে। ইউক্রেন একটি স্বাভাবিক রাষ্ট্র। এখন যা ঘটছে, তা ভয়ংকর।
ইউরোপ ও আমেরিকার মত অনেক দেশেই রুশ হামলার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হচ্ছে। এ যুদ্ধের বিরুদ্ধে রাশিয়ায়ও বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছে। দেশটিতে হাজারো যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে রুশ সরকার।
