হোম জাতীয় চীনের সঙ্গে পানি সহযোগিতা সমঝোতা স্মারক নবায়ন হচ্ছে

চীনের সঙ্গে পানি সহযোগিতা সমঝোতা স্মারক নবায়ন হচ্ছে

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 8 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক:
তিস্তার মতো পানি-ভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বাংলাদেশ-চীন পানি সহযোগিতা সমঝোতা স্মারক নবায়ন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর আমন্ত্রণে তিন দিনের সফরে বেইজিং যাচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) তিনি বেইজিং পৌঁছাবেন এবং বৃহস্পতিবার ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।

এই সফরে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি চীনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে সরকার। একইসঙ্গে তিস্তার মতো পানি-ভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বাংলাদেশ-চীন পানি সহযোগিতা সমঝোতা স্মারক এই সফরে নবায়ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন উপদেষ্টা।

চীনা ঋণের সুদ কমানো, ফেরত দেওয়ার সময় বাড়ানো এবং কমিটমেন্ট ফি তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনও কোনও ক্ষেত্রে ১৫ বছর বা ২০ বছর (ঋণ) পরিশোধ করার সময়সীমা থাকে। আমরা চেষ্টা করবো, সবগুলোকে ৩০ বছরে নিয়ে যেতে। যাতে করে আমাদের অর্থনীতির ওপর চাপ কম আসে এবং পরিশোধ করা সহজ হয়।’

চীন থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার সহায়তার কথাবার্তা আগে যেটি হয়েছিল – সেই আলোচনা বহাল আছে এবং থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাজেট নিয়ে আমাদের সমস্যা আছে এবং বাজেট সহায়তা নিয়ে আমরা কথা বলবো। আমরা দেখবো তারা আমাদের কতটুকু সহায়তা দিতে পারে। প্রকল্প ঋণ যদি ত্বরান্বিত করা যায়, তবে আমাদের সুবিধা হতে পারে।’

গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট উদ্যোগ

চীনের গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট উদ্যোগকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে বাংলাদেশ।

জিডিআই বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছু জিনিস নিয়ে আলোচনা চলমান আছে এবং এটি বহাল থাকবে। আমরা বিষয়টিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখি।’

জিডিআই সমঝোতা স্মারক নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ মুহূর্তে সমঝোতা স্মারকে যাবো কিনা, সেটি এখনই বলতে পারছি না।’

পানি সহযোগিতা সমঝোতা স্মারক

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে নদী ও পানিবিষয়ক যে সমঝোতা স্মারক রয়েছে, সেটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং এই সফরে সেটি সই হতে পারে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘পানি নিয়ে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে যে সহযোগিতা আছে, সেটার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং সেটি নবায়ন করার সিদ্ধান্ত আছে।’

তিনি বলেন, ‘পানি সহযোগিতা নিয়ে যে সমঝোতা স্মারক আছে, সেটির মেয়াদ শেষ। সুতরাং, এটি নবায়ন করতে হবে এবং সেটিই প্রথম কাজ। নির্দিষ্ট প্রকল্পের বিষয়ে অনেক আলোচনা লাগবে। বাংলাদেশ অবশ্যই নিজের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেবে।’

তিস্তা প্রকল্প নিয়ে সফরে আলোচনা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিস্তা প্রকল্প যে সমঝোতা স্মারকের অধীনে হবে, সেটি আমরা নবায়ন করবো। এটি একটি প্রকল্প এবং সেটি নিয়ে আলোচনা এর পরবর্তী বিষয়। অগ্রগতি হতে পারে কিছু, প্রাথমিক কথাবার্তা হতে পারে।’

সফরের লক্ষ্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ স্বল্পকালীন এবং এ সফরের লক্ষ্য কী, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক সেটি নির্দিষ্ট কোনও সরকারকেন্দ্রিক নয়। কিছু ইস্যু আছে যা এক মাস বা এক বছরের ইস্যু নয়। ইস্যুগুলো অনেক পেছন থেকে হয়ে আসছে। আপনারা জানেন, গত সরকারের অবস্থান কী ছিল এবং ওই সরকারের সময়ও কিছু অগ্রগতি হয়েছে। এখন আমরা কি সেগুলো বাদ দিয়ে দেবো? হয়তো নয়। আমরা দেখবো যে, চীনের সঙ্গে আমাদের দেশের স্বার্থ সংরক্ষিত হচ্ছে কিনা এবং এই প্রক্রিয়াটি চলমান।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন চলে যাবো এবং পরবর্তী সরকার যখন আসবে– তখন বলবে না যে, এর সবকিছু বাতিল। বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু সমস্যা হয়তো আছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনও পরিবর্তন করতে হয় না। কিন্তু আমাদের এখানে কখনও কখনও পরিবর্তন করতে হয় সরকারের চরিত্রের কারণে। আমি মনে করি না যে, আমাদের সরকারের মেয়াদ নির্দিষ্ট নয় এবং যেহেতু এই সরকারের দীর্ঘদিন থাকবে, এমন পরিকল্পনাও নেই। এজন্য আমাদের যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়গুলো আছ – চীন বা অন্য দেশের সঙ্গে, সেটা বাদ দিলে চলবে না।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন