আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দেশীয় জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে উৎসাহিত করতে এবং এই খাতে চীনের আধিপত্য রোধ করতে চীনা নির্মিত ও পরিচালিত জাহাজের ওপর নতুন বন্দর ফি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে এ ফি কার্যকর হবে।
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার এক বিবৃতিতে নতুন ফি ঘোষণা করেন। নতুন নিয়ম অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতি টনেজ (জাহাজের ধারণ ক্ষমতা) বা প্রতি কন্টেইনারের ওপর ভিত্তি করে চীনের সঙ্গে সম্পৃক্ত জাহাজের ওপর ফি প্রযোজ্য হবে। তবে সব বন্দরে এই ফি নেওয়া হবে না, যেমনটি এই শিল্পের কিছু লোক উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, প্রতি এনটি ১৮ মার্কিন ডলার বা প্রতি কন্টেইনারে ১২০ মার্কিন ডলার থেকে শুরু হবে এই ফি। এর অর্থ ১৫ হাজার কন্টেইনার বহনকারী একটি জাহাজ ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বিশাল ফি গুনতে হতে পারে।
বছরে পাঁচবার পর্যন্ত এ ফি নির্ধারণ করা হবে। মালিক যদি মার্কিন নির্মিত জাহাজের জন্য অর্ডার দেন, তাহলে ফি মওকুফ করা যেতে পারে।
চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্পের উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। চীনা জাহাজের ওপর নতুন করে ফি নেওয়ার পদক্ষেপ উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রভাবশালী মার্কিন জাহাজ নির্মাণ শিল্প ধীরে ধীরে হ্রাস পায় এবং এখন বিশ্বব্যাপী উৎপাদনে তাদের অবদান মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।
এই খাতটি এখন এশিয়ার আধিপত্যে রয়েছে, যেখানে চীন বিদ্যমান সমস্ত জাহাজের প্রায় অর্ধেকই নির্মাণ করেছে। দেশটি দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের চেয়েও এগিয়ে রয়েছে।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, এ তিনটি এশীয় দেশ বেসামরিক জাহাজ নির্মাণের ৯৫ শতাংশেরও বেশি অবদান রাখছে।
এদিকে, বেইজিং সতর্ক করে দিয়েছে, নতুন এ ফি ‘সকল পক্ষের জন্য ক্ষতিকর’ হবে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, এই ফি বিশ্বব্যাপী শিপিং খরচ বাড়িয়ে দেবে, বিশ্বব্যাপী উৎপাদন ও সরবরাহ শৃঙ্খলের স্থিতিশীলতা ব্যাহত করবে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়াবে এবং মার্কিন ভোক্তা ও ব্যবসায়িক স্বার্থের ক্ষতি করবে। অবেশেষে তারা মার্কিন জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে সফল হবে না।