অনলাইন ডেস্ব :
অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিবকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন পাসপোর্ট ভিসা উইংয়ের প্রথম সচিব (উপসচিব) হিসেবে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল হিসেবে কাজ করা শামীম হোসেনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে কর্মকালে ২০২১ সালের ৪ আগস্ট সুরক্ষা সেবা বিভাগের একটি চিঠিতে তাকে দায়িত্ব হস্তান্তর করে দেশে ফিরে এসে ওই বিভাগে যোগদানের নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তাকে কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত করে দেয়ার পর তিনি এখন পর্যন্ত সুরক্ষা সেবা বিভাগে যোগদান করেননি।
এরপর তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধি অনুসারে যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ এর অভিযোগে রুজু করা বিভাগীয় মামলা করে কারণ দর্শাতে বলা হয়। অভিযুক্ত কর্মকর্তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব দিলেও ব্যক্তিগত শুনানির জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেননি। জবাবে তিনি সরকারি কাজে যোগদান করা সম্ভব হচ্ছে না বিধায় তাকে সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার অনুরোধ করেন।
সরকারি কর্মচারী বিধিমালা মোতাবেক অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট শামীম হোসেনের বিরুদ্ধে যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’-এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা শেষে বিধিমালার ৭(৮) বিধি মোতাবেক অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ সরকারি ই-মেইল থেকে ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তার ব্যক্তিগত ইমেইলে পাঠানো হয়।
দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশ পাওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দাখিল করার জন্য নির্দেশনা থাকলেও নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও কোনো জবাব দেননি শামীম হোসেন। এরপর তদন্ত প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে তাকে বিধি অনুযায়ী ‘চাকরি থেকে অপসারণ’ করতে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়।
কমিশন প্রস্তাবিত গুরুদণ্ড দেয়ার সিদ্ধান্তের সাথে ঐকমত্য পোষণ করে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, শামীম হোসেনের বিরুদ্ধে রুজু করা বিভাগীয় মামলায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার বিধি মোতাবেক যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন প্রস্তাবিত দণ্ডের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করায় একই বিধিমালার বিধি অনুযায়ী তাকে ‘চাকরি থেকে অপসারণ’ করার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সম্মতি দিয়েছেন। ফলে তাকে পলায়নের তারিখ অর্থাৎ ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ‘চাকরি থেকে অপসারণ’ করা হয়েছে।