হোম জাতীয় চাঁদপুরের অর্ধশত গ্রামে ঈদ সোমবার

জাতীয় ডেস্ক :

চাঁদপুরের অর্ধশত গ্রামে সোমবার (২ মে) উদ্‌যাপিত হবে ঈদুল ফিতর। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদ্‌যাপন করবেন তারা। ইতোমধ্যে জেলার হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, শাহরাস্তি ও মতলব উত্তরের এসব গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদ উদ্‌যাপনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন।

সোমবার সকাল ৮টায় শুরু করে সকাল ৯টা পর্যন্ত এসব গ্রামে অন্তত ২০টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এর মধ্যে টোরা মুন্সিরহাট বাজার জামে মসজিদে সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন মাওলানা এএসম রহমত উল্লাহ। আর হাজীগঞ্জের সাদ্রা হামিদিয়া সিনিয়র মাদরাসা মাঠে ইমামতি করবেন পীরজাদা মাওলানা আরিফ চৌধুরী।

এদিকে আফগানিস্তানের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের দুটি গ্রামের কিছু মানুষ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করছেন। রোববার (১ মে) সকালে হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফ মাদরাসা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন সাদ্রা দরবার শরিফের পীর মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী।

বিষয়টি নিয়ে আগাম ঈদ উদ্‌যাপনকারীদের মধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

দেশে আগাম ঈদ পালনকারীদের একজন ফরিদগঞ্জের টোরা মুন্সিরহাটের আনোয়ার হোসেন মামুন মুন্সি রোববার দুপুরে সময় সংবাদকে জানান, তাদের পাশে হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা ও শমেসপুর গ্রামের হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার আজ ঈদ উদ্‌যাপন করেছে। তবে সেখানে মুসল্লিদের ব্যাপক সমাগম ঘটেনি।

সাদ্রা দরবার শরিফের আরেক পীর মো. আরিফ চৌধুরী বলেন, আমরা আজ (রোববার) ঈদ করছি না। আমার চাচারা ঈদ উদ্‌যাপন করলেও আমাদের কাছে তা গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছে না। তাই সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে আমরা সোমবার ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করব।

তবে সাদ্রা দরবার শরীফের বড় পীরজাদা পীর ড. মুফতি বাকী বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী বলেন, হানাফি, মালেকি ও হাম্বলি—এই তিন মাজহাবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তেও যদি চাঁদ দেখা যায়। আর সেই সংবাদ যদি নির্ভরযোগ্য মাধ্যমে পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তেও পৌঁছায় তাহলে পূর্ব প্রান্তের মুসলমানদের জন্য রোজা রাখা ফরজ এবং ঈদ করা ওয়াজিব।

তার দাবি, শনিবার আফগানিস্তান, নাইজার ও মালিতে চাঁদ দেখে গেছে। ওই সংবাদ নির্ভরযোগ্য ভিত্তিতে প্রাপ্ত হয়ে আজ আমরা ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন করছি। পাশাপাশি ঢাকার সদরঘাটস্থ খানকা, আসকোনা এবং পটুয়াখালীর বদরপুর দরবার শরিফে ঈদের জামাত হয়েছে। এ ছাড়া চাঁদ দেখার বিষয়টি যথাসময়ে পৌঁছে দিতে না পারায় অনেক গ্রামে ঈদ উদ্‌যাপন হয়নি। তারা পরবর্তীতে ঈদ উদ্‌যাপন করবেন।

প্রতিবছর চাঁদপুরের চারটি উপজেলার অর্ধশত গ্রামে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা একদিন আগে উদ্‌যাপিত হয়। জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরিফের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.) এর অনুসারীরা বিগত ৯৪ বছর ধরেই প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে পবিত্র ঈদ উদ্‌যাপন করে থাকেন।

সাদ্রা ছাড়াও এক দিন আগে পবিত্র ঈদ উদ্‌যাপন করা গ্রামগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বড়কূল, অলিপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাসারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মোহনপুর, এখলাশপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।

এ ছাড়া চাঁদপুরের পাশের নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও শরীয়তপুর জেলার কয়েকটি এলাকায় এক দিন আগে পবিত্র ঈদ উদ্‌যাপন করা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন