বাণিজ্য ডেস্ক:
জ্বালানি সংকট ও কারিগরি ত্রুটির কারণে বৃহত্তর চট্টগ্রামের ২৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১০টি ইউনিটই দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে আছে। বাকি ১৯টি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছে অনেকটা ঢিমেতালে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সবশেষ তথ্যানুযায়ী, রাউজান তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটের ২ নম্বর ইউনিট কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ। একইসঙ্গে ২১০ মেগাওয়াটের ১ নম্বর ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১১২ মেগাওয়াট।
২৪২ মেগাওয়াটের কাপ্তাই জল বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানির উচ্চতা এবং গতিবেগ কম থাকায় ৪টি ইউনিটই এখন বন্ধ রয়েছে। আর ৪৬ মেগাওয়াটের বাকি একটি ইউনিটে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। একইভাবে ৪৩০ মেগাওয়াটের শিকলবাহার ৩টি ইউনিটের মধ্যে দুটি ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ। বাকি ইউনিটে উৎপাদন হচ্ছে ২১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ২৭ মেগাওয়াটের রাঙ্গামাটির কাপ্তাই এবং কক্সবাজারের টেকনাফের সোলার কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরী বলেন, জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। জ্বালানি সংকট না থাকলে এ ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতো না।
শুধু চট্টগ্রামে ১ হাজার ২৯১ মেগাওয়াটের বিপরীতে ১ হাজার ৪০৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে বলে দাবি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি)। তারপরও লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন, কয়লা এবং জ্বালানির যে সংকট, তা দূর করা খুব প্রয়োজন। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে, তাই এ সংকট থাকাটা যৌক্তিক না এখন।
হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তুললেও জ্বালানি সংকটসহ কারিগরি ত্রুটির কারণে তার সুফল পাচ্ছে না দেশের মানুষ। আর ভাড়া করা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও বকেয়া বিল না পেয়ে উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পিএইচপি অটোমোবাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আকতার পারভেজ বলেন, সরকার অনেক টাকা বিনিয়োগ করে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করেছে। কিন্তু ওই কেন্দ্রগুলো থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না। কেন এই উৎপাদন ব্যাহত হবে, তা খুঁজে বের করে সমাধান করতে হবে।
৩০০ মেগাওয়াটের জুলদা কেন্দ্রে মাত্র ১৩৪ মেগাওয়াট, ১০০ মেগাওয়াটের হাটহাজারীতে ৫৭, দোহাজারীতে ৮৫, ২৪ মেগাওয়াটের রিজেন্টে ১৩, ৫০ মেগাওয়াটের ইউনাইটেড কেন্দ্রে ২০, বারাকার ৫০ মেগাওয়াট কেন্দ্রে ৬, ১০৬ মেগাওয়াটের শিকলবাহা বারাকা কেন্দ্রে ৫১ এবং ১১০ মেগাওয়াটের বারাকা কর্ণফুলী কেন্দ্রে ৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।