হোম অন্যান্যসারাদেশ গ্রাহকের টাকা নিয়ে নয় ছয়ের অভিযোগে উত্তরা ব্যাংক শাখার ক্যাশিয়ার সাময়িক বরখাস্ত

গ্রাহকের টাকা নিয়ে নয় ছয়ের অভিযোগে উত্তরা ব্যাংক শাখার ক্যাশিয়ার সাময়িক বরখাস্ত

কর্তৃক
০ মন্তব্য 168 ভিউজ

মোংলা প্রতিনিধি :

গ্রাহকের টাকা জমা না দেখিয়ে আত্মসাৎ এর চেষ্টার অভিযোগে উত্তরা ব্যাংক মোংলা শাখার ক্যাশিয়ার জিয়াউর রহমান কে সাময়িক বরখাস্তসহ অনত্র্য বদলির খবর পাওয়া গেছে। ওই ঘটনা ধামাচাপা দিতে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বরখাস্তের বিষয়টি গোপন রাখার অভিযোগ উঠেছে ব্রান্স ম্যানেজারের বিরুদ্ধে।

ব্যাংক ম্যানেজার ওই ক্যাশিয়ারের পক্ষ নেয়ায় খোদ ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সাধারণ গ্রাহকের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে।

খোঁজ খবরে জানা গেছে, এক গ্রাহক নিজ একাউন্টে টাকা জমা দেয়ার সময় ভুলবসত ১০ হাজার টাকা বেশি জমা দেন। ব্যাংক ক্যাশিয়ার মোঃ জিয়াউর রহমান কৌশলে বাড়তি টাকা সরিয়ে জমা রশিদে স্বাক্ষর ও সিল দিয়ে ওই গ্রাহককে বিদায় করে দেন।

এরপর ওই গ্রাহক তার হিসাব মিলিয়ে বুঝতে পারেন তিনি ব্যাংকে বেশি টাকা জমা দিয়েছেন। পুনরায় তিনি উত্তরা ব্যাংকে আসেন এবং টাকা গ্রহণকারী ক্যাশ অফিসারের নিকট বাড়তি টাকা ফেরত চান। কিন্তু ক্যাশিয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

এনিয়ে গ্রাহক ও ক্যাশিয়ার জিয়াউর রহমানের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। পরে শাখা ম্যানেজারের আশ্বাসে ওই গ্রাহক চলে যান। পরে গ্রাহকের দাবীর প্রেক্ষিতে ঘটনার দুইদিন পর ব্যাংকের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে টাকা নয় ছয়ের বিষয়টি ধরা পড়ে। এতে দেখা যায়, গ্রাহকের জমা দেয়া বাড়তি টাকা ক্যাশিয়ার জিয়াউর রহমান নিজ পকেটে তুলে নিয়েছেন।

সিসি ক্যামেরার এমন ভিডিও দেখার পর গ্রাহকের টাকা ফেরত দেন জিয়াউর রহমান একই সাথে ওই গ্রাহকের কাছে ক্ষমাও চান। আর তার ভুল হয়ে স্বীকার করে শাখা ম্যানেজারের কাছে লিখিত স্বীকারোক্তি দেন। সেই স্বীকারোক্তি খুলনা শাখার মাধ্যমে ঢাকার হেড অফিসে পাঠানোর পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই শাখার এক কর্মকর্তা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে বিষয়টি সকল গ্রাহকদের মধ্য চাউর হলে তাড়াতাড়ি তাকে এখান থেকে খুলনায় বদলি করা হয় ক্যাশিয়ার জিয়াউর রহমানকে। শাস্তিমুলক ব্যবস্থা হিসেবে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তা কোনভাবেই স্বীকার করেননি শাখা ম্যানেজার। শাখা ম্যানেজার বলেন, এটা ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই এ বিষয়ে কোন তথ্য জানাতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়েদেন।

একটি সুত্র বলছে,সাময়িক বরখাস্ত উড্ড করতে নানা ধরণের তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন অভিযু্ক্ত ক্যাশিয়ার জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান মোংলা শাখায় ৬ মাস চাকুরীকালে তিনি এমন আরো অনেক ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে সেই সকল তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে এখন।

এদিকে ম্যানেজার হিসেবে জে এম মাহমুদুল হাসান উত্তরা ব্যাংকে মোংলায় যোগদানের পর থেকে গ্রাহক সেবা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সাথে ব্যাংকটি লেনদেন পরিচালনা করে আসলেও নতুন ম্যানেজার হিসেবে জে এম মাহমুদুল হাসান আসার পর ব্যাংকটির সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গ্রাহকদের রয়েছে নানান অভিযোগও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, গ্রাহকের টাকা নিয়ে লুকোচুরি করে বড় ধরণের দুর্নামে ফেলে দিয়েছে পুরো শাখাটিকে। এমন দায় আমরা নিতে চাইনা। ক্যাশিয়ার জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়ার পর শাখা ম্যানেজার জে এম মাহমুদুল হাসানের সহযোগীতায় তাকে এখান থেকে দ্রুত বদলি করে দেয়া হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে উত্তরা ব্যাংক মোংলা শাখার ম্যানেজার জে এম মাহমুদুল হাসান বলেন, এটা ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ ও গোপনীয় বিষয়। এ নিয়ে আপনারা যা জানেন লেখেন, সংবাদকমীদের আমার জানা আছে। তারা কি করতে পারে, সেটি আমি বুঝি।

অন্যদিকে টাকা নয় ছয়ের বিষয়ে এ প্রতিবেদক ব্যাংকটির মোংলা শাখায় প্রবেশ করতে গেলে সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে নানা ভোগান্তীর কথা জানাতে থাকেন উপস্থিত কয়েকজন গ্রাহক। অর্পিতা নামে একনারী বলেন, তিনি পানির বিল দিতে সকাল ১০ টায় এসেছেন, ১২ টার সময় তার বিলটি পরিশোধের জন্য তাকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এমন নানা অভিযোগ ছিলো আরো কয়েকজন গ্রাহকের।

এ বিষয়েও শাখা ম্যানেজারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এমন ভোগান্তী সবাইকে সহ্য করতে হয়। ব্যাংকের সামনে দাড়িয়ে থাকা শাজাহান নামক এক ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘদিন ওই শাখায় লেনদেন করেন তিনি। কিন্তু বর্তমান ম্যানেজার আসার পর গ্রাহক ভোগান্তী বেড়েছে এখানে। তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে পৌর কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্টভাবে এ ব্যাংকটিতে পানির বিল জমা দেয়ার বিধান করায় তারা তাতে আরো বেশি কষ্টে-ভোগান্তী আছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন