হোম আন্তর্জাতিক গাজায় যু্দ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি হয়েছে, নিশ্চিত করলো ইসরায়েল

গাজায় যু্দ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি হয়েছে, নিশ্চিত করলো ইসরায়েল

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 11 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় জিম্মিমুক্তির জন্য একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, আলোচনা দলের মাধ্যমে চুক্তির বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। পরে শুক্রবার রাজনৈতিক-নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা আহ্বান করার নির্দেশ দেন তিনি। সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি অনুমোদনের জন্য বৈঠকে বসবে বলে জানানো হয়। জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের ইতোমধ্যে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার গাজা যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুমোদনের জন্য নির্ধারিত মন্ত্রিসভা ভোট স্থগিত করেন নেতানিয়াহু। তিনি হামাসের বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তে শর্ত পরিবর্তনের অভিযোগ তুলেছিলেন।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দোহায় ইসরায়েল, হামাস, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের প্রতিনিধিরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় চুক্তিটি বুধবার প্রথম ঘোষণা করা হয়। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা এই চুক্তি রবিবার কার্যকর হবে।

তবে নেতানিয়াহু তখন বলেছিলেন, চুক্তির চূড়ান্ত দিকগুলো এখনও প্রক্রিয়াধীন, তবে এটি বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ধন্যবাদ জানান। যদিও চুক্তির বিষয়ে ইসরায়েলি আলোচকরা সম্মত হয়েছেন, এটি কার্যকর করতে মন্ত্রিসভার অনুমোদন প্রয়োজন।

এদিকে, চুক্তির খবর জানার পর অনেক ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবার উল্লাস প্রকাশ করেছে। তবে গাজায় সংঘাত থেমে থাকেনি। চুক্তি ঘোষণার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৮০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন বলে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, চুক্তি ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার গাজায় ৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।

প্রথম ধাপে ছয় সপ্তাহে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, যার মধ্যে নারী, শিশু ও প্রবীণরা অন্তর্ভুক্ত। এর বদলে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েলি সেনারা গাজার ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল থেকে সরে আসবে।

বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিরা ফিরে আসতে পারবেন এবং প্রতিদিন শত শত ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে পারবে।

দ্বিতীয় ধাপে বাকি জিম্মিদের মুক্তি, ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং স্থিতিশীল শান্তি ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে।

তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে জিম্মিদের মৃতদেহ ফেরত এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করা হবে, যা কয়েক বছর সময় নিতে পারে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক নজিরবিহীন হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্যে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭৮৮ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।

গাজার ২৩ লাখ জনগণের বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত। খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। ত্রাণ সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছে।

ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাস এখনও ৯৪ জন জিম্মিকে আটক রেখেছে, যাদের মধ্যে ৩৪ জনকে মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন