হোম জাতীয় গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

জাতীয় ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার মক্কায় পবিত্র ওমরাহ পালন করেন। পরে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি দেশের জনগণ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনায় দোয়া করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। ছবি : ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার মক্কায় পবিত্র ওমরাহ পালন করেন। পরে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি দেশের জনগণ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনায় দোয়া করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। ছবি : ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও অঞ্চলটিতে অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে গাজায় মানবিক সহায়তা নিশ্চিত ও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানান। তিনি ভয়াবহ এই যুদ্ধ, নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ ও অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধে ভূমিকা রাখতে বিশ্বনেতাদের প্রতিও আহ্বান জানান। খবর বাসসের।

সৌদি আরব সফররত প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার জেদ্দার একটি হোটেলে ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে এ আহ্বান জানান। ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এবং সৌদি সরকার এই সম্মেলন আয়োজন করে।

শেখ হাসিনা বলেন, একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমি ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের পক্ষে আমার ভূমিকা অব্যাহত রাখব।

গাজায় নিরীহ নারী ও শিশুদের ওপর ইসরাইলি নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ নৃশংসতা ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় অমানবিক নির্যাতনের শিকার দুই লাখ নারীর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এই ঘটনাগুলো আমাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার বাবা-মা এবং নারী-শিশুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এ নৃশংসতা মিয়ানমারের হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতনের দৃশ্যই ফুটিয়ে তুলছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা নারী ও শিশুরা নৃশংসতার শিকার হলে ২০১৭ সালের আগস্টে আমাদের সীমান্তে আশ্রয় চেয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী মুসলিম নারীদের জন্য এক গুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছেন। পরামর্শগুলো হলো প্রথমত, ফিলিস্তিনে অবিলম্বে সংঘাতের অবসান এবং সেখানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ওপর অপরাধের বিচার।

দ্বিতীয়ত, সব অপরাধ, সহিংসতা, বৈষম্য ও নারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান ইসলামোফোবিয়াকে ‘না’ বলা।

তৃতীয়ত, এসডিজি-৫ পূরণের লক্ষ্যে লিঙ্গ সমতা অর্জন ও নারীদের ক্ষমতায়নের দিকে যথাযথ মনোযোগ প্রদান।

চতুর্থত, মুসলিম নারীরা যেন স্বাধীনভাবে জনসমক্ষে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারেন, তা নিশ্চিতকরণ।

তিনি আরও বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও মূল স্রোতে নারীদের ভূমিকার উজ্জ্বল উদাহরণ বাংলাদেশ বন্ধুপ্রতিম মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে এ-সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা বিনিময়ে প্রস্তুত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওআইসি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে এই বহুলপ্রতীক্ষিত ইস্যুগুলোতে সংলাপ প্রত্যাশিত।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে এর সম্ভাবনা উপলব্ধি করে খুব তাড়াতাড়ি ওআইসির নারী উন্নয়ন সংস্থায় (ডব্লিউডিও) যোগ দেয়। তিনি বলেন, ডব্লিউডিও এর যাত্রা শুরু করেছে এবং আমি আশা করি, ইসলামকে আরও ভালোভাবে বোঝার মাধ্যমে আজকের চাহিদাগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এ ম্যান্ডেটকে প্রসারিত করা যেতে পারে। আর তবেই আমরা একটি বৈষম্যহীন, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বিশ্বের স্বপ্ন দেখতে পারি। আমি এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সাফল্য কামনা করছি। শেখ হাসিনা এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ইসলামে নারীর মর্যাদা তুলে ধরার জন্য সৌদি আরব ও ওআইসিকে ধন্যবাদ জানান।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন