হোম জাতীয় গড়াই নদে নিখোঁজ ঢাবি ছাত্রের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত

জাতীয় ডেস্ক:

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার গড়াই নদে গোসলে নেমে নিখোঁজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মো. তানভীরের (২৩) উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। তানভীর বরগুনার সদর থানার নলী চরকগাছিয়া গ্রামের মো. আব্দুল মালেকের ছেলে। তার বাবা বরগুনা সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।

সোমবার (১২ জুন) বিকেলে পৌনে ৪টার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী রেললাইনের কুমারখালীর গড়াই রেলসেতু এলাকায় সাঁতরে নদ পার হতে গিয়ে নদে ডুবে যান তিনি। তার সঙ্গে আরও দুই বন্ধু নামলেও তারা তীরে উঠতে সক্ষম হন।

দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রেল সেতুর নিচে উৎসুক জনতা ভিড় করেছেন। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সদস্যরা গড়াই নদে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। তীরে তাবু টাঙিয়ে বসে আছেন তানভীরের বাবা, বোন, ছোট ভাই, বন্ধসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এদিকে সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।

তার বন্ধু সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, শুকনা নদীতে অল্প পানি দেখে তিনিসহ তারা তিন বন্ধু সাঁতার দিয়ে নদী পার হচ্ছিলেন। কিন্তু তানভীর সাঁতার জানতো না। পার হওয়ার সময় বন্ধু তানভীর ডুবে যান।

ছেলের শোকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন বোন ও বাবা। ছোট ভাই তাহসিন জানান, ভাইয়া আমাকে খুলনায় বেড়াতে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু বিকেলে নদীতে নেমে নিখোঁজ হন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, একটি হাইয়েস গাড়ি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের ১৩ জন ছাত্র মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ঘুরতে যান। তারা প্রথমে মেহেরপুরের মুজিবনগর, কুমারখালীর শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ী ও লালন আখড়াবাড়ি দেখেন। এরপর আটজন গড়াই নদে রেলসেতুর নিচে গোসল করতে নামেন। তাদের মধ্যে তিনজন সাঁতরে গড়াই নদ পার হওয়ার চেষ্টা করেন। দুই বন্ধু তীরে উঠতে সক্ষম হলেও তানভীর নামে একজন পানির স্রোতে তলিয়ে যান। খবর পেয়ে কুমারখালী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ও খুলনার ডুবুরিরা উদ্ধার অভিযান শুরু করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সবুজ আলী বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি নদীতে গোসল করতেছিলাম। নদীর ওপারে (পশ্চিম) ৮ জন গোসল করছিলেন। তাদের মধ্যে তিনজন সাঁতরে এপারে আসার পথে পানির স্রোতে ও পাকে পড়ে। এসময় তিনি দুজনকে উদ্ধার করে ওপরে তোলেন। কিন্তু অনেক খুঁজেও আরেকজনকে পাননি।’

কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পরিদর্শক মো. বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে সোমবার রাত ১০ টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়। সকাল ৭টা থেকে পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। ১২ জন কর্মী অভিযানে অংশগ্রহণ করেছেন। সাঁতার দেয়া তিনজনের মধ্যে একজন ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের ছেলে।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, ফায়ার সার্ভিস, জেলে ও স্থানীয় বাসিন্দারা ছাত্রকে উদ্ধারের জন্য কাজ করছেন। তাকে না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এ খবর লেখার সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত ছিল।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন