হোম আন্তর্জাতিক ‘গজনবী’র সফল পরীক্ষা চালাল পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ করল পাকিস্তান। আরও একটি সফল পরীক্ষা করল দেশটির সেনাবাহিনী।

ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। ‘গজনবী’ নামে ওই ক্ষেপণাস্ত্র, ভূমি থেকে ভূমিতে আঘাত হানতে সক্ষম। এর আওতা ২৯০ কিলোমিটারের মধ্যে। দেশটির সেনাবাহিনীকে এ জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষণের কথা নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের সেনা মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর। একই ক্ষেপণাস্ত্র ২৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্ব আঘাত আনতে পারে। বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) মধ্যরাত নাগাদ এই পরীক্ষা করা হয়েছে। তার আগে বুধবার জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল করাচির কাছে সোনমিয়ানি নামের একটি জায়গা থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হবে।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কৌশলগত সামরিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গজনবী ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালান হয়েছে। সেইসাথে এই ক্ষেপণাস্ত্রের যান্ত্রিক খুঁটিনাটি যাচাই করাও এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল।

পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান। গজনবী নামে ওই ক্ষেপণাস্ত্র, ভূমি থেকে ভূমিতে আঘাত হানতে সক্ষম। স্বল্প পাল্লার ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র বহন করতে পারে। সে কারণেই এটি ব্যবহার করার মতো অনেক ক্ষেত্র রয়েছে।

দেশটির সেনাবাহিনীকে এ জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। তারা আশাবাদী, এর মাধ্যমে দেশটির সামরিক বাহিনী আরও শক্তিশালী হবে।

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা দীর্ঘদিনের। চীনের সঙ্গেও ভারতের দ্বৈরথ এখন চরমে। এ অবস্থায় বেইজিংয়ের মিত্র, ইসলামাবাদের এমন কার্যক্রমে নয়াদিল্লীর শঙ্কা আরও বাড়লো।

এর আগে এ বছরের মার্চে শাহিন-১ নামের আরেকটি মধ্যম পাল্লার পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল পাকিস্তান। এ বছরে এখন পর্যন্ত ৫ টি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালালো দেশটি। গজনবী ছাড়াও তারা শাহিন-৩, ফাতাহ-১ এবং ক্রুজ মিসাইল বাবুর এর সফল উৎক্ষেপণ করেছে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর ইস্যুতে উত্তেজনা চলছে। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। ১৯৪৭ সালের পর ভারতের স্বতন্ত্র রাজ্যের মর্যাদা পেলেও বর্তমানে কেন্দ্রের শাসনে চলছে অঞ্চল দুটি। নরেন্দ্র মোদি সরকার পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে ভারতীয় সংবিধানের বিশেষ ধারা ৩৭০ ও ৩৫ এর ‘ক’ বিলোপ করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দুটি তৈরি করে। ফলে স্বতন্ত্র রাজ্যের পরিবর্তে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ এখন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল।

কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের সংঘাত অনেক পুরনো। এই ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকবার, হয়েছে প্রাণহানিও। কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বিলোপের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতশাসিত কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বিলোপ করে রাজ্যটিকে কেন্দ্রশাসিত দুটি অঞ্চলে বিভক্ত করে বিজেপি সরকার।

এই উত্তেজনার মধ্যেই একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ গজনবীর উৎক্ষেপণ নিশ্চিত ভাবেই দুশ্চিন্তা বাড়াবে ভারতের।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন