হোম এক্সক্লুসিভ খুলনায় নির্মিত হচ্ছে এশিয়ার বৃহত্তম গণহত্যা জাদুঘর

খুলনায় নির্মিত হচ্ছে এশিয়ার বৃহত্তম গণহত্যা জাদুঘর

কর্তৃক
০ মন্তব্য 149 ভিউজ

খুলনা অফিস :

আজ ১৭ মে ২০২০ গণহত্যা জাদুঘর ৬ষ্ঠ বছরে পদার্পণ করেছে। ২০১৪ সালের ১৭ মে এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুনের উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র গণহত্যা জাদুঘর হিসেবে খুলনায় যাত্রা শুরু করে। যা গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর সংক্ষেপে যেটি গণহত্যা জাদুঘর নামেই পরিচিত। খুলনায় স্থাপিত এই জাদুঘরটি বাংলাদেশের এবং দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র গণহত্যা জাদুঘর। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত ইতিহাসের ভয়াবহতম গণহত্যা-নির্যাতনের স্মৃতি আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এই প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।

জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৭ মে গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর যাত্রা শুরু করলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থায়ীভাবে এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় খুলনার ২৬, সাউথ সেন্ট্রাল রোডে একটি দুইতলা বাড়িসহ জমি প্রদান করেন। বর্তমানে সেই ভবনটি ভেঙ্গে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের তত্ত¡বধানে ৬ তলার অত্যাধুনিক জাদুঘর নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যেটি হবে এশিয়ার বৃহত্তম গণহত্যা জাদুঘর।

এছাড়া সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আরেকটি বিশেষ প্রকল্প ‘গণহত্যা-নির্যাতন ও মক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র’ গত তিন বছর ধরে সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার গবেষণায় কাজ করছে। তৈরি করছে সারাদেশের গণহত্যা, বধ্যভূমি, গণকবরের তালিকা, এগুলোর ডিজিটাল ম্যাপিং।

এই জাদুঘর অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনকে সভাপতি এবং শিল্পী হাশেম খানকে সহসভাপতি করে ১১ সদস্যের একটি ট্রাস্টি বোর্ডের অধীনে পরিচালিত হয়। লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, কবি তারিক সুজাত, অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, কর্ণেল (অব.) সাজ্জাদ আলী জহির জহির, বীর প্রতীক, অধ্যাপক শংকর কুমার মল্লিক, অধ্যাপক মোসাম্মৎ হোসনে আরা, অমল কুমার গাইন এ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। ড. চৌধুরী শহীদ কাদের ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক।

ইতোমধ্যে রাশিয়া, ইউক্রেন, বসনিয়া ও বেলারুশের গণহত্যা জাদুঘর বাংলাদেশের এই জাদুঘরের সাথে যৌথভাবে কাজ করছেন। গণহত্যা-নির্যাতনের নানা স্মারকে একাত্তরের ভয়াবহতার নিদর্শন এই জাদুঘরটি বর্তমানে অস্থায়ীভাবে খুলনার সোনাডাঙ্গায় পরিচালিত হচ্ছে। আশা করা যায় ২০২১ সালের মধ্যেই চলমান প্রকল্পের কাজ শেষ হলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের মতো গণহত্যা জাদুঘরও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি প্রদর্শনের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হবে।

প্রতিবছর এই দিনটাকে কেন্দ্র করে গণহত্যা জাদুঘর নানাবিধ আয়োজন করে থাকে; কিন্তু এবার বৈশ্বিক মহামারি পরিস্থিতিতে ভিন্নভাবে এই প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। এছাড়াও, গণহত্যা জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ৩ মে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।

পরের দিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অধ্যাপক মামুনের চিকিৎসার জন্য ৬ সদস্যেও মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। ৭ মে অধ্যাপক মামুনকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের এইচডিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি হলে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি বেশ সুস্থ বোধ করছেন। আজকের কোভিড টেস্টে অধ্যাপক মামুনের রিপোর্ট নেভেটিভ এসেছে। আগামীকালও নেগেটিভ আসলে তিনি করোনামুক্ত হিসবে হাসপাতালের ছাড়পত্র পাবেন বলে আশা রাখি।

গণহত্যা জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার স্মারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এই যাদুঘরের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি, প্রাক্তন মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি, সংস্কৃতি সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ গণহত্যা জাদুঘরের সকল শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন, শীঘ্রই বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্ব এই মহামারী থেকে নিস্তার পেয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফিরে আসবে। গণহত্যা জাদুঘরের আগামী দিনের পথচলায় সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং সকলের কাছে দোয়া কামনা করেছেন। ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত ট্রাস্টিবৃন্দ সকলকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন