আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইতিহাসে এমন কিছু বিষয় রয়েছে যার কোনো অর্থ খুঁজে পাওয়া যায় না। সেটি বিস্ময় হয়েই থেকে যায়। তেমনই একটি হল ‘হর্নেট বলস’। একসময় সোনার খনি থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল বিশালাকার এই দুটি বল। কেন খনিতে এই বল দুটি ছিল, এর কাজ কী ছিল? এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর এখনও জানা যায়নি। পুরো বিশ্বের কাছে এই বল দুটি আজও বিস্ময়।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া খনি অঞ্চল হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। ওই এলাকায় একাধিক খনি রয়েছে। ১৯ শতক জুড়ে ভার্জিনিয়ায় একের পর এক সোনার খনির সন্ধান পাওয়া যায়। সে সময় একটি খনি থেকে ওই দুটি বল উদ্ধার হয়েছিল।
১৯৯৮ সাল থেকে ভার্জিনিয়ার মনরো পার্কের গোল্ড মাইনিং ক্যাম্প জাদুঘরে বল দুটি রাখা রয়েছে। ভার্জিনিয়ার খনি অঞ্চলের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে ওই জাদুঘরে। ওই পার্কের মধ্যে রাখা রয়েছে বলগুলো।
বলগুলো দেখতে বড় আকারের কলসির মতো। আর ভিতরটি ফাঁকা। মুখটি লোহার জাল দিয়ে আটকানো। বলটি তৈরিও হয়েছে লোহার কাঠামোর উপর।
লোহার কাঠামোর উপর সিমেন্টের আস্তরণ দিয়ে বানানো বল দুটি সাত ফুট উঁচু। এর পরিধি প্রায় ২০ ফুট। প্রতিটি বলের ওজন ছয় হাজার ৩৫০ কিলোগ্রাম। তাই শুধু আকারেই নয়, ওজনেও বল দুটি আক্ষরিক অর্থেই দানবীয়।
খনিতে এই বল দুটি পাওয়ার পর থেকে এটি নিয়ে অনেকেই নানান কথা বলেছেন। অনেকের মতে, খনির আকরিক গুঁড়ো করে সোনা আলাদা করতে কাজে লাগানো হত এ বলগুলো। একটি দণ্ডের দুপাশে বল দুটি আটকানো হলে এটি যন্ত্রের মতো কাজ করত। ঘোড়া বা কোনো শক্তিশালী প্রাণীর সাহায্যে দণ্ড ঘুরিয়ে বল দুটিকে পেষণ যন্ত্রের মতো ব্যবহার করা হত বলে মনে করা হয়।
আবার ভিন্ন মতও রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, খনি থেকে উদ্ধার হওয়া পাথর-আকরিক বলের ভিতরে রেখে তার পর সেটিকে খুব জোরে ঘোরানো হত। এতে প্রয়োজনীয় বস্তু পাথর থেকে আলাদা হয়ে পড়ত আর সহজেই সংগ্রহ করে নেওয়া যেত।
তবে বলগুলো নিয়ে রহস্য এখনও কাটেনি। বলগুলোর নাম রাখা হয়েছিল ‘হর্নেট’। এমন নামকরণ নিয়েও ভিন্ন মত রয়েছে। অনেকের মতে, দেখতে অনেকটা ভীমরুলের চাকের মতো হওয়াতেই এর নাম রাখা হয়েছে ‘হর্নেট’। ইংরেজিতে ভীমরুলকে ‘হর্নেট’ বলা হয়।
কারও মতে, এর ভিতরে পাথর দিয়ে ঘোরানোর সময় খুব জোর শব্দ তৈরি হয়। ভালোভাবে শুনলে মনে হতে পারে যেন এক ঝাঁক ভীমরুল উড়ে বেড়াচ্ছে। সে কারণেই এমন নামকরণ বলে মনে করেন অনেকে।
তবে এই বলগুলো নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি আজও। মনরো পার্ক জাদুঘরে সেই বিস্ময় জাগিয়ে পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণের কারণ হয়ে রয়ে গিয়েছে ‘হর্নেট বলস’।