হোম খেলাধুলা ক্যারিবিয়ানের পথে বসেই স্ট্যাটাসে তামিমের আত্মপক্ষ সমর্থন

খেলাধূলা ডেস্ক :

টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারটা যেন ধোঁয়াশায় পরিপূর্ণ হয়ে আছে টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের। তামিম টি-টোয়েন্টি খেলতে চান না— এমন গুঞ্জনের পর ঘোষণা আসে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে ছয় মাস বিরতির। জানুয়ারির সেই ঘোষণার পর ছয় মাস শেষ হতে চলেছে। তাই আবার আলোচনায় তামিমের টি-টোয়েন্টিবিষয়ক ভাবনা। যার পরিপ্রেক্ষিতে এবার বোর্ড-তামিম মুখোমুখি। অবস্থা এতটাই জটিল যে, উইন্ডিজ সফরের যাত্রাপথেই এই বিষয়ে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে স্ট্যাটাস দিতে হলো তামিমের।

কয়েক দিন আগে এক অনুষ্ঠানে তামিম ইকবাল বলেছিলেন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে প্ল্যান বলার সুযোগই দেয়া হচ্ছে না তাকে। হয় মিডিয়া নতুবা অন্যরাই বলছে তার ক্যারিয়ার নিয়ে। তাই তিনি এ বিষয়ে কিছু বলবেন না। তার কথায় স্পষ্টতই বোর্ডের বিরুদ্ধে অনুযোগের সুর ছিল, যা ভালোভাবে নেননি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ক্রিকবাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডপ্রধান বলেন, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেলার ব্যাপারে বোর্ড তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে তামিম যে অভিযোগ করেছে সেটি ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’।

বোর্ড তামিমের অভিযোগ অস্বীকার করে বলে, তামিমের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি খেলা নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। এমনকি বিসিবি সভাপতি নিজেই তামিমকে দলে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি খেলা নিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি এমন দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি তাকে আমার বাড়িতে ডেকে অন্তত চারবার অনুরোধ করেছি (টি-টোয়েন্টি খেলার ব্যাপারে)। আমি জানি বোর্ডের অন্য সদস্যরাও কথা বলেছে তার সঙ্গে। সে তখন বলেছে, খেলতে পারবে না। আর এখন এগুলো কী বলছে!’

স্পষ্টতই বোর্ড তামিম ইকবালের কথায় বিব্রত। তাই নিজেদের দিক থেকে যুক্তি তুলে ধরে উল্টো তার অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করছেন বিসিবি সভাপতি পাপন। এমন সংঘাত মুহূর্তে তামিম নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন,। যেখানে তিনি বলছেন, তার সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে বোর্ডের বিরুদ্ধে তিনি কিছু বলেননি। নিজের লেখায় তিনি স্বীকারও করে নিয়েছেন বোর্ড থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগের কথা।

তামিমের সেই ফেসবুক পোস্টটি তুলে দেয়া হচ্ছে –

‘আমার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি কথার সূত্র ধরে অনেকে বিভ্রান্ত হচ্ছেন বা মিডিয়ায় কিছু বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে দেখতে পাচ্ছি। দুদিন আগে একটি অনুষ্ঠানে আমি স্পষ্ট করে বলেছি, আমার ঘোষণা আমি দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছি না, অন্যরাই নানা কিছু বলে দিচ্ছে। এখানে বোর্ড কমিউনিকেট করেনি বা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি, এ রকম কোনো কথা আমি একবারও বলিনি।

বোর্ড থেকে কয়েকবারই আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে টি-টোয়েন্টি নিয়ে। আমি ৬ মাসের বিরতি নিয়েছি বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে। এরপরও বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে কয়েক দফায়। এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন আমি কখনোই তুলিনি।

আমি সেদিন অনুষ্ঠানে যা বলেছি, আজকে আবার বলছি, ‘টি-টোয়েন্টি নিয়ে আমার যে প্ল্যান, সেটা তো আমাকে বলার সুযোগই দেওয়া হয় না। হয় আপনারা (মিডিয়া) বলে দেন, নয়তো অন্য কেউ বলে দেয়। তো এভাবেই চলতে থাকুক। আমাকে তো বলার সুযোগ দেওয়া হয় না। এত দিন ধরে আমি ক্রিকেট খেলি, এটা ডিজার্ভ করি যে আমি কী চিন্তা করি না করি, এটা আমার মুখ থেকে শোনা। কিন্তু হয় আপনারা কোনো ধারণা দিয়ে দেন, নয়তো অন্য কেউ এসে বলে দেয়। যখন বলেই দেয়, তখন আমার তো কিছু বলার নেই।’

এটুকুই বলেছিলাম। এখানে কি উল্লেখ আছে যে কেউ যোগাযোগ করেনি? এ রকম কোনো শব্দ বা ইঙ্গিত আছে? খুবই সাধারণ ভাষায় বলেছি, আমার কথা আমাকে বলতে দেওয়া হচ্ছে না। ৬ মাসের বিরতি নিয়েছি, এর মধ্যেও মিডিয়া নানা কথা লিখে বা বলে যাচ্ছে, অন্যরাও কথা বলেই যাচ্ছেন।
বোর্ডের সঙ্গে আমার যোগাযোগ নিয়মিতই আছে এবং তারা খুব ভালোভাবেই জানে, টি-টোয়েন্টি নিয়ে আমার ভাবনা কোনটি। আমি স্রেফ নিজে সেই কথাটুকু বলতে চাই, সেই সময়টুকু চাই।

সময় হলে আমার সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই আমি জানাব। ৬ মাস হতে তো এখনও দেড় মাসের বেশি বাকি। কিন্তু সেই সময়টার অপেক্ষা কেউ করছে না। এটাই দুঃখজনক।’

এবার দেখার বিষয় বোর্ড কি প্রতিক্রিয়া দেখায়। সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য খেলোয়াড় ও বোর্ডের মুখোমুখি অবস্থান বেশ নিয়মিত ঘটনা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন