জাতীয় ডেস্ক:
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর শেখানো কথায় বিএনপি অফিসে মিয়ান আরাফি সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ। এ ঘটনায় গ্রেফতার সারওয়ার্দীর রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
২৮ অক্টোবর সমাবেশে বিএনপি তাণ্ডব চালানোর পর প্রবাসী মিয়ান আরাফিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা বানিয়ে দলের অফিসে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করানো হয়। এ ঘটনায় হওয়া মামলায় মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সারওয়ার্দীকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর গণমাধ্যমকর্মীদের ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, সারওয়ার্দীর শেখানো কথায় মিয়ান আরাফি বিএনপি অফিসে বক্তব্য রাখেন। তার কথায় উৎসাহিত হয়ে বিএনপি কর্মীরা ২৯ তারিখ দেশে নাশকতা চালায়।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ বিনষ্ট ও অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরিতে কী ষড়যন্ত্র হয়েছিল, সে বিষয়ে জানতে মামলার ২ নম্বর আসামি সারওয়ার্দীর রিমান্ড চাওয়া হবে।
হারুন বলেন, মিয়ান আরাফি ২৮ অক্টোবর যেসব কথা বলেছেন, সেগুলো তিনি বলতে চাননি। লে.জে. (অব.) সারওয়ার্দী তাকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন আরাফি।
এদিকে একজন মানুষ যখন অপরাধ করে তখন তার কী পরিচয় তা বিবেচ্য নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, তিনি (সারওয়ার্দী) একজন অপরাধী। আমাদের দ্বায়িত্ব তাকে আইনের আওতায় আনা। সেভাবেই হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে বিতর্কিত সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে সাভার মডেল টাউন থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়।
এরআগে, গত শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘উপদেষ্টা’ পরিচয়ে ইংরেজিতে বক্তব্য দেন মিয়ান আরাফি নামে এই ব্যক্তি।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলটির নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন এবং সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় উদ্ধার কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপকভাবে পরিচিতি পাওয়া সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী।
শনিবার সন্ধ্যায় ইশরাক হোসেনের সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওই ব্যক্তির সংবাদ সম্মেলনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে হৈ চৈ সৃষ্টি হয়।
বিএনপির সমাবেশ ও সংঘাত ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রতিনিধিদল ওই এলাকা পরিদর্শন করেছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ খবর নাকচ করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
রোববার বিকেলে ইমিগ্রেশন পুলিশ আটক করে আরাফিকে। পরে তাকে ডিবির হাতে তুলে দেয় তারা। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি।