হোম অন্যান্যসারাদেশ কালীগঞ্জে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষক স্বামীকে বাঁচাতে প্রধান শিক্ষক সহ ৪জনের নামে মিথ্যা ধর্ষণ প্রচেষ্টা মামলা

কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি:

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে কটুক্তি করা রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি জেলে থাকা জামায়াত ক্যাডার শিক্ষক স্বামীকে বাঁচাতে স্ত্রী আয়েশা নাজনীন সুরত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হযরত আলী, দাতা সদস্য সাবেক যুবলীগ নেতা ও ইউ,পি সদস্য মাসুম বিল্লাহ সুজন সহ ৪জনের নামে সাজানো মিথ্যা ধর্ষণ প্রচেষ্টা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টির সঠিক তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভুক্তভোগীরা গত ১৬ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার সুরত আলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা শিক্ষক চক পরানপুর গ্রামের শওকত হোসেনের পুত্র জামায়াত ক্যাডার শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা আদালত কর্তৃক রাষ্ট্রদ্রোহিতার নন জিআর ২৯/২০২০, টি, আর ১৬৬/২০২০( কালী) মামলায় গত ১৩-৮ -২০২৩ ইং তারিখের রায়ে দেড় বছর সশ্রম কারা দন্ডে দন্ডিত করেন বিজ্ঞ আদালত। উক্ত রায়ে পলাতক থাকায় কালিগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে গত ২৩ /৮/ ২০২৩ তারিখে জামায়াতের ক্যাডার শহিদুল কে গ্রেফতার করে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারে পাঠায়।

উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে সাজাপ্রাপ্ত আসামি শহিদুলের স্ত্রী আয়েশা নাজনীন বাদী হয়ে গত ১৫/৯/২০২৩ ইং তারিখে সুরত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক শ্যামনগর থানার গৌরীপুর গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের পুত্র হযরত আলী অত্র বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য সাবেক ইউ,পি সদস্য ও রতনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি কালিগঞ্জ থানার আড়ংগাছা গ্রামের প্রাক্তন শিক্ষক নজির আহমেদের পুত্র মাসুম বিল্লাহ সুজন একই গ্রামের শামসুদ্দিন শেখের পুত্র ইখতিয়ার শেখ এবং পিয়ার আলীর পুত্র হোসেন আলীর নামে একটি মিথ্যা সাজানো ষড়যন্ত্রমূলক ১৪৩/৪৪৭/ ৪৪৮ /৩২৫ /৩০৭ /৩৭৯/ পেনাল কোড সহ ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ ধারায় থানায় একটি মামলা দায়ের করে। কালিগঞ্জ থানার মামলা নাম্বার ২১। সাজা প্রাপ্ত শিক্ষক শহিদুলের স্ত্রী আয়েশা নাজনীন মামলায় উল্লেখ করেন তার স্বামী জেলে থাকার সুবাদে আসামিরা তাকে প্রায় কুপ্রস্তাব দিত তাতে রাজি না হলে গত ই;১৪/৯/২০২৩ ই; রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাড়িতে যেয়ে মারধর লুটপাট এবং ধর্ষণ প্রচেষ্টা চালায়। বিষয়টি খোঁজ নিতে গত সোমবার বেলা১১ টার সময় সুরত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গেলে জামাত ক্যাডার লম্পট শিক্ষক সাজাপ্রাপ্ত শহিদুলের বিরুদ্ধে নানান অপকর্মের ঘটনা বেরিয়ে আসে।

ওই সময় সুরত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর সহকারি প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক, সিনিয়র সরকারি শিক্ষক গুণধর মিস্ত্রি, রাকিব হোসেন, রেজাউনুল করিম, গোলাম রসূল, হাফিজা খাতুন, আব্দুল করিম ছড়াও ওই বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যানআব্দুল ওয়াহেদ, সাবেক সভাপতি কাটুনিয়া রাজবাড়ী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল ওহাব সহ শতশত ব্যক্তি সাংবাদিকদের জানান শহিদুল ইসলাম শ্যামনগর থানার রামজীবনপুর একটি মাদ্রাসায় চাকরি করা কালীন ২০০৪ সালে তৎকালীন বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের এমপি আলাউদ্দিনকে মোটা অংকে ম্যানেজ করে জামায়াতের আমিরের সুপারিশে অত্র বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ প্রদান করেন। নিয়োগ পাওয়ার পর হতে সে মুজিব, আওয়ামী লীগ বিদ্বেষী হয়ে স্কুলের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের উপরে প্রভাব খাটাতো এবং বিভিন্ন নারি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের তদন্তের সত্যতার কাগজ পত্র তুলে দেন সাংবাদিকদের হাতে।

তারা আরো বলেন ২০১৮ সালে স্বাধীনতা দিবস শহীদ দিবস জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী পালনে বাধা দেওয়া সহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কে কটুক্তি করে অশ্লীল ভাষায় বঙ্গবন্ধু এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কে গালিগালাজ করে ছাত্র-ছাত্রীদের অনুষ্ঠান করতে বাধা দেয়। ২০২০ সালে একইভাবে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও শিশু দিবস পালনের সময় ব্যঙ্গ কটুক্তি করে বাধা দেয় এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বাংলাদেশ আসলে জুতার মালা পরানো সহ সরকার উৎখাতের পায়তারা ও হুমকি দিতে থাকে। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণ করতে না দেওয়া সহ কদমতলা বাজারে বসে প্রকাশ্যে সরকারকে হুমকি দেওয়া হয়। বিষয়টি ফলাও করে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ওই সময় প্রকাশ পায়। এ বিষয়ে অত্র স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক নজির আহমেদ থানায় অভিযোগ দিলে পেনাল কোড ১৮৬০ এর ১২৪ ক ৫০০ ধারায় বিগত৮/৯/২০২০ ইং তারিখ ৩৩ /২০২০ নং নন প্রসিডিউশন প্রতিবেদন দাখিল করেন। গত ২৩/৯/২০২০ আসামি শহিদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রএ ১৮৬০ সালে ৫০০ ধারায় অপরাধ বিচারের জন্য আমলে গ্রহণ করে বিজ্ঞ আদালত পরে বিজ্ঞআদালতে সাক্ষ্য প্রমান শেষে তাকে দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দণ্ডিত করেন। এছাড়াও ২০০৯ সালে তার ভাইয়ের বউকে দিয়ে একটি মিথ্যা অপহরণ মামলা বিজ্ঞ আদালতে দায়ের করে। সিআরপি ৪৬৮/৯ ( কালী)। মামলায় তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (কালিগঞ্জ সার্কেলের) নজরুল ইসলাম তদন্ত করে শহিদুলের বিরুদ্ধে আদালতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ ছাড়াও তার নামে ইউনিয়ন পরিষদে, কালিগঞ্জ থানায় একাধিক নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগসহ প্রায় হাফ ডজন জিডি অন্তর্ভুক্ত আছে।

মিথ্যা মামলার বিষয়টি তারা বলেন এই ধরনের কোন ঘটনা এলাকায় ঘটেনি। তবে কিভাবে এই মামলা তদন্ত ছাড়া রেকর্ড হয়েছে সেই বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ের তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন