নড়াইল অফিস:
১৯৭৬ সালে গঠিত হয় কালিয়া পৌরসভা। ২০১১ সালে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কালিয়া পৌরসভা বেন্দা গ্রামের বিশ্বাস পরিবারের নিয়ন্ত্রণে । এখনো পর্যন্ত কেউ বিশ্বাস পরিবারের বিরুদ্ধে নির্বাচন করে পৌরসভার মেয়র হতে পারেননি। কালিয়া পৌর সভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন নড়াইল-১ আসনের সাবেক সাংসদ শহীদ বিশ্বাস এখলাছ উদ্দীন আহম্মেদ। তার আমল থেকে শুরু করে কনিষ্ঠ পুত্র বর্তমান সাংসদ বিশ্বাস মো.কবিরুল হক মুক্তির হাতের মুঠোয় যেন সব কিছু । বাপ-বেটা দুজনেই কয়েকবার পৌর সভার মেয়রসহ সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। জেলা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশ মনে করছেন এবারের পৌরসভা নির্বাচনে পরিবর্তন আসতে পারে।
কিন্তু সরেজমিন নানা শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এখনো পর্যন্ত বিশ্বাস পরিবারের বিরুদ্ধে তেমন কোন শক্ত প্রার্থী মেয়র পদে দাড় করাতে পারেনি। গড়ে তুলতে পারেনি শক্ত কোন মোর্চা । গত পৌরসভা নির্বাচনে তার প্রমাণও দেখা গেছে।গত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান আওয়ামী লীগ নেতা মো.ওয়াহিদুজ্জামান হীরা। বিশ্বাস পরিবারের আর্শীবাদ নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করেন ফকির মো.মুশফিকুর রহমান। নির্বাচনে মুশফিকুর রহমান প্রায় দুইহাজার ভোটের ব্যবধানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামান হীরাকে পরাজিত করেন।
কালিয়া পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে এবারও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মো.ওয়াহিদুজ্জামান হীরা। তার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন বর্তমান মেয়র মুশফিকুর রহমান। সঙ্গে রয়েছেন দলটির একাংশের নেতা-কর্মীরা। এতে দলীয় প্রার্থী মো.ওয়াহিদুজ্জামান হীরা বিপাকে পড়েছেন। ৩০ জানুয়ারি এই পৌর সভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) সরেজমিনে প্রার্থীসহ এলাকার প্রায় ৫০ জন ভোটার এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,কালিয়া পৌর সভার বর্তমান মেয়র ফকির মো.মুশফিকুর রহমানকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। গত পৌর সভা নির্বাচনে তার কাছে প্রায় দুই হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যাওয়া আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মো..ওয়াহিদুজ্জামান হীরাকে এবারও দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এতে দলের একাংশের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী ফকির মো.মুশফিকুর রহমানের পক্ষে চামুচ প্রতীকে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। মো.মুশফিকুর রহমান উপজেলা স্বেচ্ছাসেব লীগের সভাপতি। ওয়াহিদুজ্জামান হীরা বলেন,গতবারের নির্বাচনে কালিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন আর রশীদ,সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান কৃঞ্চপদ ঘোষসহ আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নড়াইল-১ আসনের সাংসদ কবিরুল হক মুক্তির প্ররোচনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ফকির মো.মুশফিকুর রহমানের পক্ষে গণসংযোগ করেছিলেন।
প্রতিদিন রাতে তারা জোটবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের কাছে মুশফিকুর রহমানের পক্ষে ভোট চেয়েছিলেন। এর মাধ্যমে তারা তাকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। এবার সে পরিবেশ নেই। ওই নেতৃবৃন্দ এখন আর তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন না। তারা নৌকার পক্ষে কাজ করছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস বোস,সাধারণ সম্পাদক ও মো.নিজাম উদ্দীন খান নিলুসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ কালিয়ায় এসে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি বলেন, দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মুশফিকুর রহমানকে ইতোমধ্যে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। এবার নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী।