হোম অন্যান্যসারাদেশ কোভিড-১৯ এর কারণে মধু মেলা হচ্ছে না আজ কেশবপুরের সাগরদাঁড়িতে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৭ তম জন্ম বার্ষিকী

জয়দেব চক্রবর্ত্তী,কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি:

বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ আধুনিক বাংলা কাব্যের রূপকার অমিত্রাক্ষর ছন্দের জনক ও সনেট প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৭ তম জন্মবার্ষিকী ( ২৫ জানুয়ারি)। দিবসটি পালন উপলক্ষে যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিকাল তিন টায় উদ্বোধন, আলোচনাসভা ও সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আয়োজন শেষ করা হবে বলে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম আরাফাত হোসেন নিশ্চিত করেছেন। বিকাল ৩ টায় জন্মবার্ষিকীর উদ্বোধন করবেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। করোনা ভাইরাসের কারনে এবার জন্ম বার্ষিকী ও সপ্তাব্যাপী মধূ মেলার আয়োজন হচ্ছে না বলে উদযাপন কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান জানিয়েছেন। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার কেশবপুর থানার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামের বিখ্যাত দত্ত পরিবারে জন্ম নেন মধুসূদন দত্ত। তার বাবা ছিলেন রাজনারায়ণ দত্ত ও মা জাহ্নবী দেবী। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সাগরদাঁড়িতে করোনা ভাইরাসের কারণে একদিনেই শেষ হচ্ছে মাইকেল মধূসূদন দত্তের জন্মনুষ্ঠান। জানা গেছে , দুপুরে সাগরদাঁড়িতে মধুকবির আবক্ষে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মধ্য দিয়ে এবারের অনুষ্ঠান শুরু হবে।

এরপর আলোচনা সভা তারপর সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মহাকবি যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে ১৮২৪ সালের এদিনে জন্মগ্রহণ করেন।মাইকেল মধুসূদন দত্তের পিতার নাম রাজনারায়ণ দত্ত, মা জাহৃবী দেবী। শৈশবে সাগরদাঁড়ির পাশে শেখপুরা গ্রামের মৌলভী খন্দকার মখমল সাহেবের কাছে বাংলা ও ফার্সি শিক্ষা লাভ করেন। ১৮৩৩ সালে সাগরদাঁড়ি ছেড়ে কলকাতার খিদিরপুর যান। সেখানে লালবাজার গ্রামার স্কুলে ইংরেজি, ল্যাটিন সহ বিভিন্ন ভাষা শিক্ষা নেন। কবি ১৮৩৭ সালে হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। ১৮৪২ সালে ইংরেজিতে প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ প্রবন্ধ লিখে কলেজ থেকে স্বর্ণপদক লাভ করেন।

১৮৪৩ সালের ৯ ফেব্রয়ারি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন কবি। একইসাথে পিতৃগৃহ থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসন নেন। হিন্দু কলেজে পড়তে না পেরে অন্য কলেজে ভর্তি হন ও গ্রিক ও সংস্কৃত ভাষায় জ্ঞানার্জন করেন তিনি। ১৮৪৮ সালে সাগরদাঁড়িতে আসেন। তারপর মাদ্রাজ চলে যান। ১৮৫২ সালে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইস্কুল বিভাগে শিক্ষকতার চাকরি নেন। ১৮৫৪ সালে দৈনিক ¯েপকটেটর পত্রিকায় সহ-স¤পাদক পদে নিযুক্ত হন। ১৮৫৭ সালে আদালতে দোভাষী হিসেবে কাজ শুরু করেন । এবছরই তিনি মহাকাব্য রচনায় মনোনিবেশ করেন।

সাহিত্যিক কালিপ্রসন্ন সিংহের বাসভবনে অমিত্রাক্ষর ছন্দে মহাকাব্য রচনার জন্য বিদ্যোৎসাহিনী সভার পক্ষ থেকে সম্বর্ধনা এবং মহাকবি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি ইংল্যান্ডে গিয়ে ব্যারিস্টারিতে ভর্তি হন। মাইকেল মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। তার সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য নামক মহাকাব্য। তার অন্যান্য উলে¬খযোগ্য গ্রন্থাবলী : দ্য ক্যাপটিভ লেডি, শর্মিষ্ঠা, বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ, একেই কি বলে সভ্যতা, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, বীরাঙ্গনা কাব্য, ব্রজাঙ্গনা কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলী, হেকটর বধ ইত্যাদি।১৮৭৩ সালের ২৯ জুন বেলা ২টায় মারা যান মহাকবি মধুসূদন দত্ত।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন