হোম Uncategorized করোনায় ইন্টারনেট নির্ভরশীলতা বেড়েছে

করোনায় ইন্টারনেট নির্ভরশীলতা বেড়েছে

কর্তৃক
০ মন্তব্য 175 ভিউজ
অনলাইন ডেস্ক:

করোনা ভাইরাসের কারনে সরকার ঘোষিত এক মাসের ছুটিতে ইন্টারনেট নির্ভরতা বেড়েছে হু হু করে। সম্প্রতি এক হিসেবে দেখা গেছে, চলতি মাসের ১০ই এপ্রিল দেশে ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৫০ জিবিপিএস (গিগাবাইট পার সেকেন্ড)। এরমধ্যে সাবমেরিন ক্যাবলের ব্যান্ডউইথ ছিল ১ হাজার ৫০ জিবিপিএস। অবশিষ্ট ৭০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করে দেশের ৭টি আইটিসি (ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল)। পরদিন দেশে ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭০০ জিবিপিএস।  বর্তমানে ২৫-৩০ শতাংশ ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বেড়েছে। এ প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, এই সংকটকালে আমাদের ইন্টারনেট ব্যবস্থা ভালো রয়েছে। ইন্টারনেট বিষয়ক কোনও কাজে আমরা ব্যর্থ হইনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনলাইন বৈঠক থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজ আমরা সাফল্যের সঙ্গে করতে পারছি।

তিনি জানান, গত কয়েকদিনে আমাদের দেড়শ’ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথের ব্যবহার বেড়েছে। ইন্টারনেটই এখন আমাদের লাইফ লাইন। প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টরা জানান, মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় টোটাল ব্যান্ডউইথ ব্যবহার বেড়ে গেছে। বর্তমানে ব্যান্ডউইথ সবচেয়ে বেশ ব্যবহার হচ্ছে ইউটিউব দেখা, ফেসবুক ব্যবহার ও ফেসবুক ভিডিওতে। নেটফ্লিক্স ও অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও রয়েছে জনপ্রিয় বিনোদন মাধ্যম তালিকার শীর্ষে। অন্যান্য জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তালিকায় আরও আছে ইনস্টাগ্রাম ও লিংকড-ইনের ব্যবহার। আর ভিডিও কনফারেন্সে এখন সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে জুম, স্কাইপ, মাইক্রোসফট টিমস, গুগল হ্যাংআউটস মিটস ও সিসকো ওয়েবেক্স। এদিকে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো ভয়েস ও ইন্টারনেট প্যাকেজ নতুন করে সাজিয়েছে। কোনও কোনও অপারেটর আগের দামে বেশি ডাটা অফার করছে। কোনও অপারেটর তাদের ডাটার দাম কমিয়েছে। মোবাইল অপারেটররা বলছে, তাদের ডাটার (ইন্টারনেট) ব্যবহার বাড়লেও কমেছে ভয়েস কলের পরিমাণ। এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে তরঙ্গের বিনিময়ে ফ্রি টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা দাবি করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে সারা দেশেই অঘোষিত লকডাউন চলছে। এমতাবস্থায় নাগরিকদের খাদ্য, পানীয়, জ্বালানী ও ঔষধের পাশাপাশি সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ সেবার অন্যতম নাম হচ্ছে টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জরুরী সেবার অন্তর্ভূক্ত এই খাত। কিন্তু এ সেবাটি জরুরী সেবার অন্তর্ভূক্ত করা হলেও সমন্বয়হীনতার কারণে এই সেবা প্রাপ্তিতে বড় বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, এমতাবস্থায় গ্রাহকদের ঘরে রাখতে হলে তার জন্য দরকার নিরবিচ্ছিন্ন টেলিকম ও ইন্টারনেট সেবা। কারণ এই মুহুর্তে সবচেয়ে বড় বিনোদন ও গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে মুঠোফোন। সব ব্যবসা পতনের সাথে সাথে এই খাতের ব্যবসাতেও কিছু পরিবর্তন ও ক্ষতি সাধিত হয়েছে যা অস্বীকার করার কোন উপায় নাই। ভয়েস কল কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। তবে ডাটার ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে টেলিযোগাযোগ সেবাদান কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।  বৈশ্বিক এই মহামারীতে বেশ কিছু দেশ ইতিমধ্যে তাদের নাগরিকদের বিনামূল্যে টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে এই ধরনের সেবা প্রাপ্তিতে রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ফ্রি দিলে ভ্যাট-ট্যাক্স কিভাবে আদায় হবে নাকি মওকুফ করা হবে এই সিদ্ধান্ত সরকার প্রদান করতে পারে। অন্যদিকে ফ্রি দিলে এই সেবার চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পাবার ফলে বর্তমান তরঙ্গ দিয়ে এই সেবা দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই আমাদের দাবি থাকবে, অপারেটরদের থেকে একেবারে বিনামূল্যে না নিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ যা অব্যবহৃতভাবে পড়ে আছে (তরঙ্গ) তা প্রত্যেক অপারেটরকে ৫ মেগাহার্স করে ৬ মাসের জন্য ফ্রি প্রদান করতে পারে সরকার। আর এর মাধ্যমে অপারেটরদেরকে বিনামূল্যে এই সেবা প্রদান করতে বাধ্য করা যেতে পারে। আর এতে করে ৮০ শতাংশ নাগরিককে ঘরে আটকে রাখা যাবে বলে আমরা মনে করি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন