হোম অন্যান্যসারাদেশ করোনায় ইচ্ছেমতো ঔষধের দাম নিচ্ছে. নড়াইল সদর হাসপাতালের বলাকা ফার্মেসীর সিন্ডিকেট

করোনায় ইচ্ছেমতো ঔষধের দাম নিচ্ছে. নড়াইল সদর হাসপাতালের বলাকা ফার্মেসীর সিন্ডিকেট

কর্তৃক
০ মন্তব্য 80 ভিউজ

নড়াইল অফিস :

করোনা শুরু থেকেই কেবলমাত্র ঔষধের দোকানই সারাদিন খোলা থাকে। জ্বর-শ্বাসকষ্ট সহ করোনা চিকিৎসার প্রাথমিক ঔষধগুলো কিনতে হিড়িক পড়ে যায় সাধারন জনগণের মধ্যে। এই সুযোগে জেলার বিভিন্ন ঔষদের দোকান নানাভাবে প্রতারনা করে আসছে কিন্তু দেখার কেউ নাই। ভিটামিন ডি থ্রি-বন এই ইনজেকশন টি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় বলে এর চাহিদা বেড়ে যায়। ১২০টাকার বিদেশী এই ঔষধটি এখন ৩’শ টাকায় বিক্রি করছে দোকানীরা। উপায় না পেয়ে কয়েকগুন বেশী টাকা দিয়েই তা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ভূক্তভোগীরা। এর মতো আরো জরুরী কিছু সাধারন ঔষধের দামও নিচ্ছে দোকানদারদের খুশী মতো।

নড়াইলের বলাকা ফার্মেসী। জেলার অন্যতম বড় ঔষদের দোকান। সব ধরনের ঔষধ যেমন পাওয়া যায় তেমনি সুবিধামতো দাম হাকানো,স্বল্প মেয়দ এমনকি মেয়াদোত্তীর্ন ঔষধ বিক্রি সহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে এই ফার্মেসীর বিরুদ্ধে। করোনাকালীন সময়ে অতি জরুরী ঔষধ কিম্বা চিকিৎসা সামগ্রীর দাম বেশী নিয়ে এলাকার মানুষকে বিষিয়ে তুলেছে সদর হাসপাতালের ঔষধ সিন্ডিকেট।

গত ২৬ জুলাই ২টি ভিটামিন ডি ইনজেকশন কিনেছিলেন সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম। বাড়িতে নিয়ে দেখেন তার গায়ে একটি সীলে ২৪০ টাকা দাম লেখা আছে। পরবর্তীতে ৩ আগষ্ট সন্ধ্যায় একই ঔষধ আরো ৪ প্যাকেট কিনলে একই দাম ধরে দোকানী। প্যাকেটের গায়ে দাম দেখানোর পরেও দোকানী বলে এটাতো বিদেশী ঔষধ, এক পর্যায়ে আগের দিনের দুটি সহ ৬টি ঔষধের অতিরিক্ত ১৮০টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয় বলাকা ফার্মেসীর মালিক নিতাই সাহা।

একই দোকান থেকে মাল কিনে প্রতিনিয়ত ঠকছেন হাজারো মানুষ। ইব্রাহিম বাবু নামের একজন ক্রেতা জানান,বলাকা ফার্মেসী একটি অক্সিমিটারের একদাম হাকায় ২ হাজার টাকা,যা আমি যশোর থেকে আরো ভালোটা কিনেছি ১১’শ টাকা দিয়ে। এরা একটা ডাকাত,মানুষের বিপদে সুযোগ নিয়ে গলাকাটা দাম রাখছে।

আজাদ রহমান নামের আরেক ক্রেতা বলেন,আমি বলাকা ফার্মেসী থেকে একটি নেবুলাইজার মেশিন কিনেছি ২হাজার টাকা দিয়ে, যা পাশেই বিক্রি হচ্ছে ১৫’শ টাকা। এরা সাধারন মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে এভাবে ঠকিয়ে যাচ্ছে অথচ প্রশাসনের কেউ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

খোজ নিয়ে জানা গেছে,জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঔষধের দাম কিছুটা সহনশীল হলেও নড়াইল সদর হাসপাতাল কেন্দ্রীক একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।এই সিন্ডিকেটের হোতা বলাকা ফার্মেসীর মালিক নিতাই সাহা। এরা নিজেদের ইচ্ছামতো জরুরী ঔষধগুলোর দাম নির্ধারন করে।

মো.ইমন আহম্মেদ নামের একজন ক্রেতা বলেন,আমি একটি ভিটামিন ডি থ্রি কিনেছি ৩’শ টাকা দিয়ে।বডিরেট ২৪০টাকা থাকলেও হাসপাতাল মার্কেটের সবগুলো ঔষধের দোকানে একই দাম চেয়েছে।

ইচ্ছেমতো ঔষধ এবং চিকিৎসা সামগ্রীর দাম বেশী নেয়া প্রসঙ্গে বলাকা ফার্মেসীর মালিক নিতাই সাহা বলেন,বিদেশী ঔষধ এর দাম অনেক সময় কমবেশী হয়,অন্য কোন সমস্যা নাই।তাছাড়া আমিতো ঐ সাংবাদিকের টাকা ফেরত দিয়েছি।

ঔষধের দাম বেশী এবং সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে বিসিডিএস(বাংলাদেশ কেমিষ্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতি) নড়াইলের সভাপতি সৈয়দ আব্দুল্লাহ হেল বাকি বলেন,ঔষধের গায়ে নির্ধারিত মূল্যের বাইরে কারো কোন দাম বেশী নেবার সুযোগ নাই,যদি কেউ করে থাকে তাহলে প্রমান সাপেক্ষে তার ব্যবস্থা নেবে সমিতি,এর আগে অনেক মোবাইল কোর্টকে এ ব্যাপারে সহায়তা করেছি।

নড়াইল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট (নেজারত ডেপুটি কালেক্টর-এনডিসি)জাহিদ হাসান বলেন,এ ধরনের অভিযোগ প্রায়ই পাচ্ছি। অভিযোগের ভিত্তিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা সহ আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন এর সহকারী পরিচালক(অতিঃ দায়িত্ব)মোহাম্মদ মামুনুল হাসান বলেন,অনেক চিকিৎসা সরঞ্জাম এর গায়ে দাম নির্ধারন থাকে না এটা ঔষধ প্রশাসন জানে,তাছাড়া দাম নির্ধারন করা ঔষধের মূল্য বেশী নিলে প্রমান সাপেক্ষে ভোক্তা অধিকারে আবেদন করলে ৩০ দিনের মধ্যেই তার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য যশোরে কর্মরত ড্রাগ সুপারেন্টেন্ড মো.রেহান হাসানের মুঠোফোন নম্বরে ফোন করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন