হোম অন্যান্যসারাদেশ করোনাতেই মৃত্যু হয়েছে বরগুনার আওয়ামী লীগ নেতার

করোনাতেই মৃত্যু হয়েছে বরগুনার আওয়ামী লীগ নেতার

কর্তৃক
০ মন্তব্য 69 ভিউজ

অনলাইন ডেস্ক :

সদ্য প্রয়াত বরগুনার আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা জিএম দেলওয়ার হোসেন (৭৪) প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।

গত মঙ্গলবার থেকে তিনি অসুস্থ থাকার বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে পৌরসভার লোছা গ্রামের নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। পরে তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইসিডিআর) পাঠানো হয়। শুক্রবার সেখান থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন বলে জানানো হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় বরগুনা জেলা প্রশাসন আমতলী উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি ওই আওয়ামী লীগ নেতার সংস্পর্শে আশা পারিবারিক সদস্য এবং চিকিৎসকদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। মানুষকে সচেতন করার জন্য  উপজেলার গ্রামে গ্রামে মাইকিং করা হয়েছে।

জানা গেছে, আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা জিএম দেলওয়ার হোসেন ঢাকা এবং বাড়ি মিলে বসবাস করতেন। ঢাকা থেকে গত ২২ মার্চ বাড়ি আসেন তিনি। পরে ৭ এপ্রিল তিনি শ্বাসকষ্ট ও জ্বরে আক্রান্ত হন। বুধবার তাকে আমতলী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে তার সবজনরা। সেখানে স্বাভাবিক রোগী হিসেবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাধ অধিকারী এবং ডা. তানজিরুল তাকে পিপিই ছাড়া চিকিৎসা দেন।

তার শারিরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বুধবার তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। ওই হাসাপাতালের চিকিৎসকরা তার করোনাভাইরাস সন্দেহে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা রোগতত্ত্ব  রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইসিডিআর) পাঠিয়ে দেন। ওই হাসপাতাল থেকে তাকে ওইদিনই বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর বিকেল সাড়ে ৫টায় অনেক লোকের সমাগমের মধ্যে দিয়ে নিজ বাড়িতে তার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

শুক্রবার দুপুর ২টার পরে আইইডিসিআর থেকে জিএম দেলওয়ার হোসেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার রিপোর্ট আসার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অনেকে। কারণ জিএম দেলওয়ার হোসেনের মৃত্যুর আগে এবং পরে অনেকেই তার কাছাকাছি ছিলেন। তাকে চিকিৎসা দেওয়া আমতলীর চিকিৎসক ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী ও ডা. তানজিরুল ইসলাম হোম কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছেন।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা  ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, জিএম দেলওয়ার হোসেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বুধবার তাকে আমি এবং আমার এক সহকর্মী পিপিই ছাড়া স্বাভাবিক রোগীর মত চিকিৎসা দিয়ে এখন আমরা দু’জন ঝুঁকির মধ্যে আছি। আমরা দুজনই এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছি।

আমতলী থানার ওসি মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, পুরো উপজেলা লকডাউনের আওতায় রাখা হয়েছে। ওই এলাকায় কেউ প্রবেশ এবং বের হতে পারবেন না।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন বলেন, এই প্রথম আমতলীতে করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আমতলী উপজেলাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। লকডাউন চলাকালে সকলকে বাসা বাড়িতে অবস্থান করতে হবে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, আমতলী হাসপাতালের দু’জন চিকিৎসক হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। প্রয়োজনে অন্য জায়গা থেকে চিকিৎসক এনে আমতলী হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা সচল রাখা হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন