আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাসরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াগনার রাশিয়ায় বিদ্রোহের পরদিনই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। ক্রেমলিনের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের বরাত দিয়ে এপি জানিয়েছে, বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২৯ জুন। তবে তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকটি কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানাননি ক্রেমলিন মুখপাত্র। তবে বৈঠকে ওয়াগনারের শীর্ষস্থানীয় কমান্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে রণক্ষেত্রে বেশ উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে ওয়াগনার। বাখমুতসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখলে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করেছে ওয়াগনার। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা না পাওয়ার বিষয়ে একাধিকবার অভিযোগ করেন প্রিগোজিন। পরে তারই ধারাবাহিকতায় ২৩ জুন বিদ্রোহ ঘোষণা করে ওয়াগনার।
পরে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় প্রিগোজিন বিদ্রোহ বন্ধ করেন। সে সময় শর্ত ছিল ওয়াগনার প্রধান এবং তার বাহিনীর যেসব সদস্য চাইবে তারা বেলারুশে চলে যেতে পারবেন। তবে অধিকাংশ সেনাই রাশিয়ায় থেকে যাওয়াই বেছে নেন।
এদিকে, দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে খোঁজ নেই রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার প্রধানের। বেলারুশে যাওয়ার কথা থাকলেও বেলারুশ প্রেসিডেন্টের দাবি, এখনও রাশিয়াতেই আছেন ওয়াগনার প্রধান। এদিকে বিষয়টি নিয়ে নিশ্চুপ রুশ প্রশাসন। এ অবস্থায় প্রিগোজিনের অবস্থান নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। অনেকে সন্দেহ করছেন তাকে গুম করে ফেলেছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
পুতিন কখনোই তার বিশ্বাসঘাতকদের ক্ষমা করেন না বলে প্রচলিত আছে রাশিয়ার রাজনীতিতে। এতে ওয়াগনারের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অনেকেই। সেই আগুনে এবার ঘি ঢালল বেলারুশ প্রেসিডেন্টের মন্তব্য। অবশ্য এ বিষয়ে একেবারেই নিশ্চুপ রুশ প্রশাসন।
বিদ্রোহের শুরুতে রুশ প্রেসিডেন্ট ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ ক্ষমা করা হবে না বলে হুমকিও দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, ভবিষ্যৎ রক্তপাত এড়াতে ওয়াগনারের বিরুদ্ধে কোনো ধরনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।