হোম আন্তর্জাতিক এস-৪০০ ক্রয়: যুক্তরাষ্ট্রের আইনে ভারতকে বিশেষ ছাড়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

রাশিয়া থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ অস্ত্র কিনলেও ভারতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ একটি আইনে সংশোধন এনেছে দেশটি।

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে এক ভোটাভুটিতে আইনি সংশোধনী পাস হয়েছে। এতে ভারতের ক্ষেত্রে ক্যাটসা নামক আইন শিথিল করার ব্যাপারে সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতা সম্মত হয়েছেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া ও দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের।

কাউন্টারিং আমেরিকা’স অ্যাডভার্সারিজ থ্রু স্যাঙ্কশনস অ্যাক্ট (সিএএটিএসএ বা ক্যাটসা) যুক্তরাষ্ট্রের একটি কঠোর আইন। রাশিয়ার থেকে অস্ত্র কিনলেই যেকোনো দেশের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করা হয়। এ মিসাইল সিস্টেম কেনার জন্য তুরস্কের ওপর ক্যাটসা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল ও ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগের পর এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ৫টি এস-৪০০ কেনার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি সই করে ভারত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন হুমকির পরও ওই চুক্তি থেকে পিছপা হয়নি দেশটি।

এস-৪০০ মূলত একটি মিসাইল সিস্টেম বা ক্ষেপণাস্ত্র যা রাশিয়ার সব থেকে আধুনিক শক্তিশালী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত। এ ব্যবস্থায় ভূমি থেকে আকাশে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যায়। চুক্তির পর ইতোমধ্যে এস-৪০০-এর একাধিক চালান হাতে পেয়েছে ভারত। চীন ও পাকিস্তান সীমান্তে খুব শিগগিরই এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করা হবে জানা গেছে।

সম্প্রতি চীনের মোকাবিলার লক্ষ্যে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়ছে আমেরিকা। রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও সম্প্রতি তেল কিনছে ভারত। তা সত্ত্বেও ভারতের বিরোধিতা করছে না ওয়াশিংটন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার আইন সংশোধন করে ভারতকে এই বিশেষ ছাড় দেয়া হলো।

ভারতকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখতে সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসে ক্যাটসা আইন সংশোধনের প্রস্তাব আনে ক্যালিফোর্নিয়ার ভারতীয় বংশোদ্ভূত আইনপ্রণেতা রো খান্না। প্রস্তাবে তিনি বলেন, চীনা আগ্রাসনের মোকাবিলায় ভারতের পাশে দাঁড়ানো উচিত আমেরিকার।’

মার্কিন কংগ্রেসে ভারতীয় ককাসের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন খান্না। ২০০৪ সালে তৈরি হয়েছিল ভারতীয় ককাস। সন্ত্রাসদমন, গণতন্ত্র সুরক্ষিত রাখা-সহ নানা বিষয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়াদিল্লির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করতেই তৈরি হয়েছিল এই জোট।

বৃহস্পতিবার ধ্বনিভোটে আইন সংশোধনের বিল পাশ হওয়ার পর খান্না বলেন, ‘এই বিল পাস করানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দলমত নির্বিশেষে সকলে এই বিলকে সমর্থন জানিয়েছেন দেখে আমি গর্বিত।’

এপ্রিল মাসেই মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট ব্লিনকেন জানিয়েছিলেন, ভারতের উপরে ক্যাটসা আইন মেনে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে কি না, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে আমেরিকার একাধিক নেতাদের মুখে শোনা যায়, ভারত-মার্কিন সম্পর্কই সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন