জবি প্রতিনিধি:
সার্বজনীন পেনশন স্কিমের ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মত অর্ধদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এসময় তাদের দাবি আদায় না হলে আগামী ১লা জুলাই হতে অল আউট শাটডাউনের ঘোষণা দেন তারা।
বৃহস্পতিবার(২৭ জুন) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডক্টর শেখ মাশরিক হাসান এ ঘোষণা দেন।
এসময় মাশরিক হাসান বলেন, পেনশন একটা সামাজিক নিরাপত্তা। রাষ্ট্রের উচিত তার নিশ্চয়তা দেওয়া। কিন্তু আমরা এ সুবিধা পাচ্ছি না। উল্টো প্রচলিত সুবিধা খর্ব করা হচ্ছে। এ বৈষম্যমূলক স্কিমে বলা আছে ৭৫ বছর পর্যন্ত সরকার আমাদের পেনশন দিবে। কিন্তু এর পরে যদি রোগ-শোক হয়, তখন আমাদের কি হবে। পেনশন তো একটি নাগরিক অধিকার। আমাদের এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এরকম ইন্সিকিউর ফিল করলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহ হারাবে। যারা এ রাষ্ট্রকে মেধাহীন করার চেষ্টা করছে তা রুখে দিতে হবে। আমরা শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। সেইসাথে নতুন নীতিমালা গ্রহনের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করছি। সকল ডিন, চেয়ারম্যান ও শিক্ষকের প্রতি আহবান থাকবে, আপনারা পরিক্ষা, ক্লাস বাতিল করুন। আমরা ৩০ তারিখে শুধু পরিক্ষা কার্যক্রম চালাবো। ১ তারিখ থেকে আমাদের দাবি যদি না মানা হয়, আমাদের সকল কিছু বন্ধ থাকবে। অল আউট শাটডাউন কার্যক্রম চলবে।
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রোফেসর ড. মোমিনউদ্দিন বলেন, আমাদের জন্য, সরকারের জন্য এবং এই জাতির জন্য দুঃখজনক যে শিক্ষক সমাজ রাস্তায় নেমে এসেছে। আজ আমাদের সামাজিক মর্যাদা আর নিরাপত্তার জন্য মাঠে নামতে হয়েছে। আমরা আন্দোলন করছি ভবিষ্যতের শিক্ষকের জন্য। আমাদের আন্দোলন আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য।
তিনি আরো বলেন, এই বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিমে বলা হচ্ছে, শিক্ষকদের অবসর হবে ৬০ বছরে, যেটা আগে ছিল ৬৫ বছর। আবার যারা নতুন শিক্ষক হবে, তারা এই পেনশন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। যে আগে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে সে পেনশন পাবে, আর যারা নতুন আসবে তারা বঞ্চিত হবে, এটা অন্যাজ্য। তাই সকল শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার আহবান আমরা সবাই স্বত: স্ফূর্তভাবে এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করবো। ৩০ তারিখের ভিতরে আমাদের দাবি না মানা হলে আগামী ১ তারিখ হতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করছি।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আহ্বানে সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত কর্মবিরতি ও দুপুর বারোটা পনের মিনিট থেকে একটা পনের মিনিট পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা।
অবস্থান কর্মসূচিতে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন। এসময় শিক্ষক সমিতির নেতারা সহ বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।