হোম জাতীয় একাত্তরের স্মৃতিবিজড়িত জমিদার বাড়ি ঘুরে দেখলেন ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনার

জাতীয় ডেস্ক :

একাত্তরের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, জমিদার ও বিদ্যানুরাগী কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরীর (নাটু বাবু) বাড়ি ঘুরে দেখেছেন ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জ। ৩’শ বছর পুরানো এই জমিদার বাড়ি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনেও ভূমিকা রেখেছিল।

সোমবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে ওই জমিদার বাড়িতে যান তিনি। এ সময় ভারতের সহকারী হাইকমিশনার রাজেশ কুমার রায়না, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাধবী রায়, বাকেরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন ডাকুয়া, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল কাদের হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক জমিদার বাড়িতে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরীর স্ত্রী ছায়া রায় চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন উপহাইকমিশনার। এ সময় রাজাকারদের সঙ্গে দীর্ঘদিন লড়াই করা ছায়া রায় চৌধুরীকে অভিনন্দন জানান দূতাবাসের কর্মকর্তারা।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল শ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরীর প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছিল ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের খাবারসহ সবধরনের সহযোগিতা দিয়েছিল কুমুদ বন্ধু রায় পরিবার। স্কুলটিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হামলা চালালে এই জমিদার বাড়িতেই প্রশিক্ষণের কাজ শুরু হয়। পরে রাজাকারদের হাতেই শহীদ হন কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরী (নাটু বাবু)।

এদিকে, মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রীক জাদুঘর, হাসপাতাল কিংবা কলেজ- যেকোনো সরকারি উদ্যোগে ৩শ’ বছরের পুরোনো জমিদার বাড়িসহ সব সম্পত্তি দান করতে চান বীর মুক্তিযোদ্ধা কুমুদ বন্ধু রায় চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান পরিবারটির সদস্যরা।

বধ্যভূমিতে ‘গণহত্যা-৭১’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী

এদিকে, এদিন শ্যামপুরের বধ্যভূমিতে আয়োজন করা হয় দিনব্যাপী ‘গণহত্যা-৭১’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ভারতীয় দূতাবাসের ডেপুটি হাই কমিশনার ড. বিনয় জর্জ। এ সময় ছায়া রায় চৌধুরী ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

জমিদার বাড়ির বধ্যভূমিতে এ ধরনের চিত্র প্রদর্শনী এই প্রথমবারের মতো আয়োজিত হওয়ায় খুশি এলাকাবাসী। দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে ২১টি চিত্রকর্ম স্থান পায়। রং তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হয় ৭১’র পাকবাহিনীর ভয়াবহতা।

এর আগে, মহান মুক্তিযুদ্ধে বর্বর পাকিস্তানি ও তাদের দোসরদের হাতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তারা। পরে ভারতীয় দূতাবাসের ডেপুটি হাই কমিশনার বলেন, বাংলাদেশ তার স্বকীয়তা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ধরে রাখতেই ঐতিহাসিক এসব জায়গা সংরক্ষণ করবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন