অনলাইন ডেস্ক :
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, ঈদে ঢাকার দোকানপাট ও ঘরবাড়ি খালি থাকে। এ সময়টায় আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। প্রত্যেক বছরের মতো এবারও সারা দেশে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
আজ শুক্রবার (২১ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন ও সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে র্যাব মহাপরিচালক এসব কথা বলেন।
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে জঙ্গি হামলার বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পায়নি র্যাব। তবে, যেকোনো নাশকতা ও হামলা মোকাবিলায় র্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স ও কমান্ডো টিমকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সাদা পোশাকে টহল জোরদার থাকবে।’
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে এই মুহূর্তে মার্কেট, বিপণিবিতানগুলোতে প্রচুর বেচাকেনা, আর্থিক লেনদেন ও জনসমাগম হচ্ছে। বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি ও ভেজাল খাদ্য বিক্রির বিষয়টিও আমরা মাথায় রেখেছি। ঘরমুখো মানুষ যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে সেজন্য আমরা ব্যাটালিয়নগুলোতে সাপোর্ট সেন্টার চালু করেছি। সেখান থেকে ঘরমুখো মানুষেরা অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ পানি ও ইফতারের ব্যবস্থা রেখেছি।’
এম খুরশীদ হোসেন আরও বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের নামাজের নিরাপত্তার জন্য আমরা বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রত্যেক ব্যাটালিয়ন নিজ নিজ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন রেখেছে। দেশব্যাপী ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কন্ট্রোল রুম, স্ট্রাইকিং ফোর্স, ফুট মোবাইল প্যাট্রল, সিসি টিভি মনিটরিং, ভেহিক্যাল স্ক্যানার, রিজার্ভ ফোর্স, অবজারভেশন পোস্ট ও চেকপোস্ট থাকবে। এ ছাড়া বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াডসহ সব উইংকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
র্যাব ডিজি বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের ঘরে ফেরা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশব্যাপী র্যাবের সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল, রেল স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় র্যাব সাপোর্ট সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সড়ক ও নৌপথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, হয়রানি বন্ধ, চাঁদাবাজি, ছিনতাইকারীসহ মলমপার্টি ও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা রোধে অভিযোগ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই বাস, পিকআপ, লেগুনা ইত্যাদি যানবাহনগুলোর চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে কি না তা যাচাই করা এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন টার্মিনাল ও আশপাশের স্থানগুলোতে টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘সড়ক ও নৌপথে চালকেরা যেন প্রতিযোগিতামূলকভাবে বাস ও লঞ্চ চালনা না করে সেজন্য মালিক ও চালকদের সতর্কীকরণ ও সচেতন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফিটনেসবিহীন লঞ্চ যেন চলাচল না করতে পারে সেজন্য চেকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহে (জাতীয় ঈদগাহ, শোলাকিয়া ঈদগাহ ও দিনাজপুর বড় ঈদগাহ) নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহসহ গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহে ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এর মাধ্যমে নিরাপত্তা সুইপিং করা হবে এবং প্রয়োজনীয় সিসিটিভি কাভারেজ থাকবে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে টহল পরিচালনা করা হবে।’
এম খুরশীদ হোসেন আরও বলেন, ‘ঈদে বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থল ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আসা নারীদের উত্ত্যক্ত, ইভটিজিং ও যৌন হয়রানি রোধে মোবাইল কোর্টসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ কোনো ধরনের হেনস্তার শিকার হলে অবশ্যই কর্তব্যরত র্যাব সদস্যদের জানাবেন।’