হোম রাজনীতি ইসি ‘পাপেট’ হিসেবে কাজ করছে : রিজভী

রাজনীতি ডেস্ক:

আবারও ‘একতরফা’ নির্বাচন করতে বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) ‘সরকারের পাপেট’ হিসেবে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রোববার (১৯ নভেম্বর) বিকালে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিনের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে এই অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিপজ্জনক অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবি আদায়ে বাঁধভাঙা আন্দোলনে স্ফুলিঙ্গ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অনিবার্য গণঅভ্যূত্থানের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছে বাংলাদেশিরা।’

রিজভী বলেন, ‘আরেকটি একতরফা পাতানো ভুয়া নির্বাচনের অপচেষ্টা চলছে। মেরুদণ্ডহীন পাপেট ইসি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী তপশিল বাস্তবায়ন করতে মুখ লুকিয়ে জোরেশোরে মাঠে নেমেছে। আর নিশিরাতের সরকারের মন্ত্রী-এমপি, নেতাকর্মী, আওয়ামী লীগ সমর্থক পুলিশ-র‌্যাব গোয়েন্দারা গোটা দেশে ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে হায়েনার মতো।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী নিপীড়নে বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন মৃত্যু থেকে কয়েক মিনিট দূরে অবস্থান করছেন। বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হচ্ছে। যশোরে প্রখ্যাত নেতা মরহুম তরিকুল ইসলাম সাহেবের বাসায় বর্বরোচিত বোমা হামলার মতো সারা দেশে নারকীয় তাণ্ডব চালাচ্ছে। দিশাহীন হয়ে পাইকারী গ্রেপ্তার, আর্তচিৎকার-হুংকার, খুনের হুমকি দিয়ে ভীতিকর ভয়ানক পরিবেশ তৈরি করেছে। লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে, গান পাউডার ছিটিয়ে আগুন দিয়ে বাসযাত্রী পুড়িয়ে মারার বীভৎস কাজ করেছে আওয়ামী লীগ। আর দেশের বাইরে বিএনপির বিরুদ্ধে নাশকতার অপবাদ দিয়ে প্রচার চালিয়েছে। পুনরায় সন্ত্রাসের অপবাদ দিয়ে ’১৪- ’১৫ সালের ন্যায় আর বিদেশে মার্কেটিং করতে পারছে না। কারণ সারা দুনিয়া টের পেয়েছে বিএনপির নামে সন্ত্রাসের অপবাদ মূলত একতরফা নির্বাচনের কৌশল।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৫১০ জনের অধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার ও বিভিন্ন মামলায় ২ হাজার ৮৫ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। হরতালের প্রথম দিনে সারা দেশে সর্বাত্মক হরতাল পালনের জন্য দেশবাসীসহ দল ও সমমনা জোটের নেতাকর্মীদের প্রতি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অভিনন্দনের কথা জানান তিনি।

রিজভী বলেন, ‘শনিবার সাভারে এক অনুষ্ঠানে তার (সজীব ওয়াজেদ জয়) দাম্ভিকতাপূর্ণ কণ্ঠ শুনে দেশের মানুষ স্তম্ভিত ও হতবাক হয়েছে। একসঙ্গে জনগণ অট্টহাসিও দিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আগামী ১০/১৫ বছরে বিএনপি বলে কোনো দল বাংলাদেশে আর থাকবে না।’ তার মানে এই সময়ে তারা বিএনপিকে ধ্বংস ও নিঃশেষ করে দেবে। দেশে শুধু একটাই রাজনৈতিক দল থাকবে সেখানে ভিন্ন মতাদর্শের কেউ থাকতে পারবে না, কেউ সরকারের সমালোচনা করতে পারবে না, বাকশাল দুই স্থাপিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘যত মিথ্যাচার করুন… বিএনপি এখন বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে তৃণমূল শক্তি যতবার আঘাত এসেছে, ততবার আরও শক্তিশালী হয়েছে। বিএনপি প্রতিবারই চক্রান্তের চোরাবালির থেকে জেগে উঠে চতুর্দিকে আবার বিস্তার লাভ করেছে। বিএনপির রাজনীতি তো হচ্ছে এদেশের মৃত্তিকা থেকে উৎসারিত এবং এ দেশের মানুষের বুকের ভেতরে প্রতিথ। দেশের কোটি কোটি মানুষের আশা-ভরসার স্থল দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটির পর একটি মিথ্যা বানোয়াট ও সাজানো মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের প্রায় ৫০ লাখ নেতাকর্মীদের নামে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের ঘরছাড়া করা হয়েছে, যা বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন রেকর্ড। গ্রেপ্তার, নির্যাতন, গুম, আয়না ঘরে বন্দি ও ক্রসফায়ারে করেও বিএনপির নেতাকর্মীদের দমানো যায়নি।’

রিজভী আরও বলেন, ‘বিএনপিকে ভাঙা সরকারের কোনো অপচেষ্টাই সফল হয়নি। শত শত কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন সংস্থা ও মাধ্যমে দিয়ে শেখ হাসিনার সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কুৎসিত অপপ্রচার করেও লাভ হয়নি। বেগম খালেদা জিয়ার প্রেরণা এবং মুক্তিকামী মানুষের আশা-ভরসার স্থল দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গোটা বাংলাদেশ আজ ঐক্যবদ্ধ। সুতরাং আগামী ১০/১৫ বছর কেনো, বিশ্বের মানচিত্রে লাল-সবুজের পতাকা যতদিন থাকবে, ততদিন বিএনপি থাকবে এই দেশে ইনশাআল্লাহ।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন